ওজন কমানো নিয়ে ভাবছেন? এটা আপনার শরীর এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে । আপনার উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণ আপনাকে দীর্ঘদিন ধরে সুস্থভাবে জীবনের মজা নিতে সাহায্য করবে । শুধু তাই নয়, একটি সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জীবনযাত্রাগত বহু অসুখের প্রভাব থেকে দূরে থাকা যায় । যদি আপনার ওজন খুব বেশি হয় তাহলে শুধুমাত্র খাবার নিয়ন্ত্রণ নয়, আপনার জীবনযাত্রার অভ্যাসগুলির পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাসের সময় ও খাদ্যের নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ, দৈনন্দিন শরীরচর্চা ইত্যাদি বিষয়গুলিও আপনাকে মেনে চলতে হবে । চলুন, এই ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে জেনে নিই যে, কি কি খাবার আপনাকে এই কাজে সাহায্য করতে পারে ।
ওজন কমানোর জন্য সহজ এবং কার্যকর খাবারের তালিকা
১) প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার - প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারগুলি শুধু আপনার খিদে কমায় না, শরীরের পেশীগুলির গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় এবং শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতেও সাহায্য করে । উপরন্তু এই ধরনের খাবার বেশিক্ষণ ধরে পেট ভরার অনুভূতি দেয়, যা অতিরিক্ত খাবার খাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে ।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের কিছু উদাহরণ:
(ক) ডিম : এটি সহজলভ্য
এবং পুষ্টিকর ।
ডিমের সাদা অংশটি
ক্যালোরি কমানোর জন্য খুবই উপযুক্ত । যদি আপনার ওজন অতিরিক্ত বেশি হয় তাহলে আপনি কুসুমটি ছাড়া শুধু সাদা অংশটি
খেতে পারেন ।
(খ) মুরগির মাংস : চামড়াবিহীন মুরগির মাংস প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস ।
(গ) টোফু ও মসুর ডাল : এগুলি নিরামিষভোজীদের জন্য প্রোটিনের চমৎকার বিকল্প । এছাড়া, টেম্পে এবং অন্যান্য উদ্ভিজ্জ প্রোটিনও গ্রহণ করতে পারেন ।
২) ফাইবারযুক্ত খাবার - ফাইবারযুক্ত খাবার হজমে সাহায্য করে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে । এইধরনের খাবার ওজন কমানোর পাশাপাশি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে ।
ফাইবারযুক্ত খাবারের কিছু উদাহরণ :
(ক) আপেল ও কমলা : অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা কমায় এবং প্রচুর ফাইবার সরবরাহ করে ।
(খ) ব্রকোলি ও গাজর : এগুলিতে পুষ্টি-উপাদান বেশি থাকে, পাশাপাশি ক্যালোরি কম থাকে । স্যালাড তৈরীর
জন্যও এগুলি আদর্শ ।
(গ) গোটা শস্য : ওটস বা কুইনোয়া এই ধরনের মধ্যে আদর্শ । এইধরনের খাবারগুলো হজম হতে সময় লাগে, সুতরাং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরার অনুভূতি দেয় এবং দীর্ঘস্থায়ী এনার্জি সরবরাহ করে ।
(ঘ) বীজ ও বাদাম : ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়া বীজ এবং আখরোট এই ধরনের খাবারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য । এগুলো ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর চর্বিতে সমৃদ্ধ হওয়ার জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য আদর্শ ।
৩) স্বাস্থ্যকর চর্বি - ভালো স্বাস্থ্যকর চর্বি-উপাদানগুলি শরীরে শক্তি যোগায় এবং হরমোনের সরবরাহ ঠিক রাখে । তাই এই ধরনের খাবারগুলো আপনার চর্বি কমানোর লক্ষ্যে সহায়ক হতে পারে ।
স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত কিছু
খাবারের উদাহরণ :
(ক) অ্যাভোকাডো : সকালে টোস্টের সঙ্গে বা স্যালাডের সাথে যোগ করে এগুলিকে খেতে পারেন ।
(খ) বাদাম ও চিয়া বীজ : ছোট স্ন্যাকস হিসেবে এগুলি অত্যন্ত উপযোগী । নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে এগুলি খেলে ওজন কমাতে সহায়ক হয় ।
(খ) অলিভ অয়েল : রান্নার জন্য এবং স্যালাড ড্রেসিং হিসেবে এই ধরনের তেল ব্যবহার করলে ওজন নিবন্ত্রণে দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে ।
(গ) চর্বিযুক্ত মাছ : স্যামন, ম্যাকরেল বা সার্ডিনের মতো চর্বিযুক্ত মাছগুলি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ । যেগুলি ওজন তথা স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে ।
৪) জলসমৃদ্ধ খাবার - এই ধরনের খাবারগুলো পেট ভরায় এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে । ফলে কম ক্যালোরি গ্রহণ করেও পেট ভরার তৃপ্তি পাওয়া যায় ।
জলসমৃদ্ধ খাবারের কিছু উদাহরণ:
(ক) শসা ও তরমুজ : গরমে শরীর
ঠান্ডা রাখতে দারূন সাহায্য করে । উপরন্তু এই
খাবারগুলোর মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই
কম ।
(খ) ঝোল-ভিত্তিক স্যুপ : এগুলি কম
ক্যালোরিযুক্ত হয় এবং বেশি পুষ্টি পাওয়া যেতে পারে
।
ঠান্ডার সময় উপভোগ করার জন্য এগুলি আদর্শ । কিন্তু খেয়াল রাখবেন, বাজার থেকে প্যাকেটজাত স্যুপগুলির তুলনায় ঘরে বিভিন্ন
শাক-সবজি ইত্যাদি উপাদান দিয়ে বানানো স্যুপগুলি বেশি পুষ্টি সরবরাহ করে ।
(গ) পানীয় : ডিটক্স ওয়াটার,
গ্রিন টি, বা লেবু-মধুর মিশ্রিত জল পান করতে পারেন, যা
আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে ।
সাধারণ কিছু ভুল ধারণার সমাধান করা
১) কার্বোহাইড্রেট এবং ওজন হ্রাস - প্রচলিত ভুল ধারণাবশত: কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্যগুলিকে একেবারে বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই । বরং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) রয়েছে এমন খাবার বেছে নিন। উদাহরণস্বরূপ, ব্রাউন রাইস, ওটস, এবং মিষ্টি আলু । এগুলো ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘ সময় এনার্জি দেয় ।
২)
খাবার সময়ের ভূমিকা
- সঠিক
সময়ে খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । সকালের দিকে
বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করলে তা সারা দিনে পুড়িয়ে ফেলা সহজ হয় ।
তাই সকালের খাবার যেন পুষ্টিকর হয় । আর
রাতে হালকা খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন ।
৩)
ঠকানো খাবার (Cheat Meals) -
বাজারের প্রক্রিয়াজাত বেশ কিছু খাবার আপনার পেট ভরাতে সাহায্য করে,
কিন্তু তা আপনার শরীরকে অতিরিক্ত চর্বি প্রদান করতে পারে । তাই বাজারের প্যাকেটজাত
খাবারগুলি থেকে সতর্ক থাকুন । তবে আপনার সাপ্তাহিক ক্যালোরি সীমার মধ্যে থাকলে এবং আপনি তার নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলে মাঝে মাঝে ঠকানো
খাবার খেতে পারেন ।
৪) ওজন কমানোর হার – অত্যন্ত দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টা করলে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে বা চর্বিহীন মাংসপেশি হারানোর ঝুঁকি থাকে । প্রতি সপ্তাহে ১-২ পাউন্ড ওজন কমানো সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর । আর ধীরে ধীরে ওজন কমালে তা দীর্ঘস্থায়ী হতেও দেখা গেছে ।
৫) ডায়েট প্ল্যানে স্মুদি - ঘরে বানানো স্মুদি অত্যন্ত পুষ্টিকর হয় এবং সহজেই বানানো যায় । তবে দেখতে হবে যে, এটি যেন তাজা ফল, শাক-সবজি, বাদাম এবং দুধের মতো স্বাস্থ্যকর উপাদান দিয়ে তৈরী হয় । কিন্তু মনে রাখতে হবে, এটি সারাদিনের খাবারের বিকল্প হতে পারে না । হয়তো একবারের খাবারের বিকল্প হতে পারে ।
৬) সব
চর্বিই কি খারাপ – একেবারেই না, বাদাম বা অ্যাভোকাডোর মতো
খাবারগুলি থেকে পাওয়া চর্বিগুলি কিন্তু ওজন কমাতে সাহায্য করে । তাছাড়াও আমাদের
সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে মেটাবলিজম বাড়ানো, ত্বককে ভালো রাখা ইত্যাদি
বিষয়গুলিতে ভালো চর্বির অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে ।
৭) খুব কম খেলে কি ভালো – অত্যন্ত কম খেলে সেটা আমাদের শরীরের মেটাবলিজম প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত ধীর করে দিতে পারে, যা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে একটি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে ।
সহজ ও কার্যকর কিছু টিপস :
১) পর্যাপ্ত জল পান করুন – আপনার ওজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত জল পান করুন । বহুক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, খাবার খাওয়ার আগে এক গ্লাস জল পান করলে খাবার খাওয়ার পরিমাণ কম হয় । আর পর্যাপ্ত পরিমাণে হাইড্রেটেড থাকলে হজম ভালো হয় ।
২) খাদ্যের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন – নিজেকে বেশিক্ষণ ক্ষুধার্ত না রেখে ছোট ছোট অংশে খাবার খান । সহজ কথায়, বেশি বারে অল্প অল্প পরিমাণে খান । যাতে আপনি ক্ষুধার্ত না হয়ে একসঙ্গে অনেকটা খাবার না খেয়ে নেন ।
৩) প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন – বাজার থেকে কেনা প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন এবং ঘরে বানানো প্রাকৃতিক উপদানে ভরা খাবার খাওয়া অভ্যাস করুন ।
৪) মনোযোগ সহকারে খাবার খান – খাবার খাওয়ার সময় টি.ভি, ল্যাপটপ বা মোবাইল ছাড়া মনোযোগ সহকারে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন । এটি যেমন সঠিক পরিমাণে খাবার খেতে সাহায্য করে, তেমনই হজমেও সাহায্য করে ।
৫) নিয়মিত শরীরচর্চা করুন – নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস শরীর ফিট রাখে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর একটি সুস্থ প্রভাব ফেলে ।
৬) পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান – বেশি ঘুমানো বা কম ঘুমানো দুটিই শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব তৈরী করে । প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুম, ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে গতি দিতে পারে ।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ’s)
১)
ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর খাদ্য বিভাগ কী কী ?
উত্তর): ওজন কমানোর জন্য কার্যকর খাদ্য বিভাগগুলি হলো
নিম্নরূপ –
(ক) উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার -
ডিম, চামড়াবিহীন মুরগি, সামুদ্রিক মাছ, মসুর ডাল,
টোফু ইত্যাদি হলো এই শ্রেণীর খাবার । এগুলি হজম
প্রক্রিয়াকে বাড়ায়, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরের পেশীকে
শক্তিশালী করে ।
(খ) ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার - গোটা
শস্য, ব্রকোলি, গাজর, আপেল ও কমলার মতো ফলগুলি এই ধরনের পুষ্টি-উপাদান সরবরাহ করতে পারে । এগুলো অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরার অনুভূতি দেয় ।
(গ) স্বাস্থ্যকর চর্বি -
অ্যাভোকাডো, বাদাম, বীজ এবং অলিভ অয়েল ইত্যাদি
খাবারগুলি এইধরনের পুষ্টি-উপাদান সরবরাহ করতে পারে । এগুলো টেঁকসই শক্তি দেয় এবং শরীরের
হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে ।
(ঘ) জলসমৃদ্ধ খাবার -
শসা, সেলারি, তরমুজ এবং ঝোল-ভিত্তিক স্যুপ ইত্যাদি
খাবারগুলি শরীরে প্রচুর জল সরবরাহ করতে সাহায্য করে । এই ধরনের খাবারগুলি শরীরের হাইড্রেশন বাড়ায় এবং কম ক্যালোরি গ্রহণে সাহায্য
করে ।
২) কেন উচ্চ প্রোটিন খাবার ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ?
উত্তর): উচ্চ প্রোটিন ষুক্ত খাবারগুলি খাদ্যের তাপীয় প্রভাব
বাড়িয়ে তোলে, যার ফলে হজমের সময় বেশি ক্যালোরি পুড়তে পারে । এটি শরীরের চর্বিহীন
পেশীর ভর বজায় রাখে, যার ফলে বেসাল মেটাবলিক রেটের (BMR) উন্নতি ঘটে এবং দীর্ঘস্থায়ী তৃপ্তির অনুভূতি দেয় ।
৩) ক্যালোরির ঘনত্ব কীভাবে ওজন হ্রাসকে প্রভাবিত করে ?
উত্তর): কম ক্যালোরির খাবার যেমন – শাক-সবজি ও জলসমৃদ্ধ
খাবারগুলি বেশিক্ষণ ধরে পেট ভরার অনুভূতি দেয় । যার ফলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ
করা ছাড়াই পেট ভরানোর অভিজ্ঞতা মেলে, যা ডায়েট মেনে চলতে সাহায্য করে ।
৪) ওজন কমানোর ডায়েটে চর্বি কি সহায়ক নাকি ক্ষতিকর ?
উত্তর): ওজন কমানোর ডায়েটে স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত
খাবারগুলি, যেমন – অ্যাভোকাডো, বাদাম এবং ফ্লাক্স ও কুইনোয়া বীজের মতো খাবারগুলি
ওজন কমাতে সহায়তা প্রদান করে । এই ধরনের খাবারগুলি তৃপ্তি বাড়ায়, হরমোনের
স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমায় ।
৫) ওজন কমাতে সুপারফুড কী ভূমিকা পালন করে ?
উত্তর): সুপারফুডগুলি একই উৎস থেকে প্রচুর পুষ্টি-উপাদান সরবরাহ করে এবং বিপাকীয়
স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় । যেমন –
(ক) সবুজ পাতাযুক্ত শাক – কম ক্যালোরিযুক্ত এবং উচ্চ
ক্যালসিয়ম ও ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত ।
(খ) বেরি – পলিফেনল সমৃদ্ধ, যা ইনসুলিন সংবেদশীলতা বাড়ায় ।
(গ) বীজ ও বাদাম – প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইবারের
উৎস, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখার অনুভূতি দেয় ।
৬)
সর্বোত্তম ওজন কমানোর জন্য খাবার কীভাবে গঠন করা উচিত ?
উত্তর): একটি ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতি অনুসরণ করুন –
খাবারের সময় |
কি খাবেন |
পরিমাণ নির্দেশিকা |
ব্রেকফাস্ট |
(ক) স্ক্র্যাম্বল করা ডিম দিয়ে পালং শাক + হোল গ্রেইন (খ) বেরি এবং চিয়া বীজের সাথে
ওটমিল |
(ক) ২টি ডিম + ১ টুকরো টোস্ট (খ) ১/২ কাপ ওটস + ১/৪ কাপ বেরি + ১ টেবিল চামচ চিয়াবীজ |
মিড-মর্নিং স্ন্যাক্স |
(ক) ইয়োগার্ট সহযোগে এক মুঠো বাদাম (খ) পিনাট বাটার দিয়ে আপেলের টুকরো |
(ক) ১টি ছোট বাটি ইয়োগার্ট + ১০-১২টি বাদাম (খ) ১টি আপেল + ১ টেবিল চামচ পিনাট বাটার |
লাঞ্চ |
(ক) গ্রিলড চিকেন + সালাদ (মিশ্র সবুজ শাক, শসা) (খ) বাদামী রাইসের সাথে বাটিতে ভাজা সবজি এবং টোফু |
(ক) পাম সাইজের মুরগি + ২ কাপ সবজি (খ) ১/২ কাপ রাইস + ১ কাপ সবজি + খেজুরের আকারের টোফু |
বিকালের জলখাবার |
(ক) গাজর এবং শসার কাঠি সঙ্গে হুমাস (খ) এক টুকরো ফলের সাথে সেদ্ধ ডিম |
(ক) ১ কাপ সবজি + ২ টেবিল চামচ হুমাস (খ) ১টি ডিম + ১টি ফল |
সন্ধ্যার স্ন্যাক্স |
(ক) এক মুঠো বাদাম দিয়ে ভেষজ চা (খ) ফ্লাক্স বীজ ছিটিয়ে কটেজ চিজ |
(ক) ১ কাপ চা + ১০টি বাদাম (খ)
১/২ কাপ কটেজ চিজ + ১ চামচ ফ্লাক্স বীজ |
ডিনার |
(ক) স্টিমড ব্রোকলি এবং কুইনোয়া সহ বেকড স্যামন (খ) মসুর ডালের স্যুপ, সাথে ভাজা সবুজ সবজি |
(ক) পাম-আকারের স্যামন + ১ কাপ ব্রকোলি + ১/২ কাপ কুইনোয়া (খ) ১ বাটি স্যুপ + ১ কাপ ভাজা সবুজ সবজি |
*** এটি একটি বিকল্প মাত্র । আপনার উপলব্দ্ধতা এবং লক্ষ্য, বর্তমান ওজন, বি.এম.আর, বি.এম.আই ইত্যাদি সবদিক মিলিয়ে সেরা চার্টের জন্য কোন পেশাদার ডায়েটেশিয়ানের সাহায্য নিন ।
খাবারের সময়: মনে রাখবেন, দিনের শুরুতে অধিকাংশ ক্যালোরি গ্রহণ করলে বিপাকীয় দক্ষতা বাড়তে পারে।
ওজন কমিয়ে সুস্থ ও সুখী জীবন শুরু করুন
শরীরকে সুস্থ রেখে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ওজন কমানোর জন্যে
খাদ্যাভ্যাস সহ কিছু জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সাথে সাথে পুষ্টিবিজ্ঞানের সাহায্য
নিতে পারেন । এই ব্লগ পোস্টে উল্লিখিত খাবারগুলি শুধুমাত্র পুষ্টি-উপাদানের প্রধান
উৎস নয়, এগুলো তৃপ্তি বাড়িয়ে এবং পেট ভরার অনুভূতি দিয়ে বিপাকীয় কার্যকারিতাকেও
উন্নত করতে সহায়তা করে । আপনার খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের সঙ্গে এই খাদ্যগুলিকে
রুটিনে যোগ করলে আপনি ওজন কমানোর সাথে একটি স্বাস্থ্যকর এবং কার্যকর জীবনযাত্রার
পথে এগিয়ে যেতে পারবেন ।
কিভাবে শুরু করবেন – শুধুমাত্র কম খাওয়া নয় বরং সঠিক খাবার বেছে নেওয়ার বিষয়টিও
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারার সঙ্গে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের সময়
ও সঠিক খাদ্যের সমন্বয় আপনাকে সহজেই আপনার ওজন কমানোর লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করবে
।
অভ্যাস গড়ে তুলুন – যে খাদ্যাভ্যাস তৈরী করতে চান, তা নিয়মিত করে যান । সঙ্গে
মনোযোগ দিয়ে খাওয়ার গড়ে তুলুন, যা আপনাকে সঠিক পরিমাণে খাবার খেতে এবং অতিরিক্ত
খাওয়া আটকাতে সাহায্য করবে । এর সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস আপনার ওজন কমানোকে
আরো সহজ করে তুলতে পারে । প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পানের সঙ্গে সুষম খাদ্য
গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত ঘুম ওজন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
আজ থেকেই শুরু করুন – আমাদের এই ব্লগ পোস্টে বর্ণিত সহজ অনুকরণীয় টিপসগুলিকে
আপনার দৈনন্দিন জীবনের রুটিনে যুক্ত করুন এবং অনুসরণ করুন এবং সেই লক্ষ্যে আজ
থেকেই পরিবর্তনের শুরু করে দিন । মনে রাখবেন, ওজন কমানোর লক্ষ্য শুধু আপনার আকারের
পরিবর্তন নয়, এটি আপনাকে একটি সুস্থ ও সুখী জীবনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে । আর তার
শুরুটা আজ থেকেই শুরু করে দিন ।
0 মন্তব্যসমূহ