Header Ads Widget

ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন ও মানসিক স্বাস্থ্য : খুঁজে নিন ভারসাম্য

 

এই ব্লগ পোস্টে আমরা মানসিক স্বাস্থ্যে মোবাইফোনের প্রভাব, তার ইতিবাচক-নেতিবাচক  দিক, বৈজ্ঞানিক তথ্য সমাধান এবং ডিজিটাল সুস্থতার ৭টি কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করবো ।

প্রযুক্তি যখন দ্বিমুখী অস্ত্র 

২০২৪ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় ৮০% তরুণ-তরুণী দৈনিক গড়ে প্রায় ৩ ঘন্টা বা তার চেয়ে বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন । যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা এবং বিনোদনের নতুন নতুন নতুন দিক উন্মোচনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্মার্টফোনের এই অত্যধিক ব্যবহার মানসিক অবসাদ, নোমোফোবিয়া এবং ইনসমনিয়া বা ঘুমের সমস্যার মতো সমস্যাগুলিকেও বাড়িয়ে তুলেছে । আর সেইজন্যই আজ আমরা আমাদের এই ব্লগ পোস্টে এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যা এইসব সমস্যাগুলির উপর আলোকপাত করবে এবং তার সমাধানের রাস্তা দিতে পারবে । নীচে বিষয়গুলি দেওয়া হলো -  

·      সোশ্যাল মিডিয়ার মনস্তাত্ত্বিক ফাঁদ 

·      ডিজিটাল ডিটক্সের স্থানীয় কৌশল 

·      ভারসাম্য রক্ষার উপায় 

সোশ্যাল মিডিয়ার মনস্তাত্ত্বিক ফাঁদ

ইতিবাচক প্রভাব : সুযোগ যখন হাতের মুঠোয়  

১) পরিবার সংযোগ : কোলকাতা বা ঢাকার মতো শহরে কর্মরত ব্যক্তিরা ভিডিও কলের মাধ্যমে গ্রামে থাকা বাবা-মায়ের সাথে বা স্ত্রী বা সন্তানদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন । গবেষণায় দেখা গেছে, হোয়াটসঅ্যাপ/জুম ব্যবহারে একাকীত্ব এইসব ক্ষেত্রে প্রায় ৬৮% কমে (সূত্র: ICMR, ২০২৩) 

২) স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেস বাংলাদেশের "টনিক" বা ভারতের "ওয়াইসা" অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসে কাউন্সেলিং সুযোগ  নেওয়া যেতে পারে । সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, এইসব মাইন্ডফুলনেস অ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রায় ৪০% অবধি মানসিক চাপ কমতে দেখা গেছে ।

৩) উৎপাদনশীলতা : ভারতবর্ষের "রচিত" বা বাংলাদেশের "শ্রীবাস্তু" অ্যাপে টাস্ক ম্যানেজ করে প্রায় ৩০% অবধি  কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়ানো যায় (TBS সার্ভে)

নেতিবাচক প্রভাব : অদৃশ্য বিষণ্ণতা 

১) ডোপামিনের ফাঁদ ইনস্টাগ্রাম/টিকটকের প্রতিটি লাইক মস্তিষ্কে প্রায় জুয়ার নেশার মতো ডোপামিনের সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ঢাকার প্রায় ৫২% কিশোর ফোন ছাড়া উদ্বেগ বোধ করে (সূত্র: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ২০২৪) 

২) অসম তুলনা : সোশ্যাল মিডিয়ায় অভ্যস্ত যুবক-যুবতীদের কল্পনায় একটি অসম্ভব দুনিয়া গড়ে তুলতে দেখা গেছে বলে সমীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া যায় । আর এর ফলে তারা স্বাভাবিক জীবন হারিয়ে ফেলে প্রায়শ:ই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে ।

৩) ঘুমের শত্রু : স্মার্টফোনের থেকে বেরোনো নীল আলো শরীরের মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন ২৩% অবধি কমিয়ে দিতে পারে, যার ফলে ইনসমনিয়া ও মুড সুয়িংয়ের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে । (সূত্র: ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন)

৪) সাইবার বুলিং : ইন্টারনেট এবং ফোনের সংযুক্তির পরে অনলাইন হয়রানির মাত্রা বহু অংশে বেড়ে গেছে বলে ভারতের সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্টের করা সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে । সেই রিপোর্ট অনুযায়ী আরো একটি তথ্য পরিষ্কার যে, ভারতবর্ষে অনলাইন হয়রানির বেশিরভাগ শিকার হন মহিলারা (সংখ্যাটা প্রায় ৩৭%) ।

ডিজিটাল সুস্থতার ৭টি কৌশল এবং ভারসাম্য রক্ষা  

) "ডিজিটাল উপবাস" করুন : সপ্তাহের কোন একটি নির্দিষ্ট দিন (ছুটির দিনগুলি ধরে নিতে পারেন) ফোনের ব্যবহার কমিয়ে বা একদম পরিহার করে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিন (অবশ্যই ডিজিটাল মাধ্যম পরিহার করে)। স্বল্প দূরত্বের কোন জায়গায় পারিবারিক পিকনিক বা ঘুরে আসার মতো প্রোগ্রামও করতে পারেন ।

) সূর্যাস্ত মোড চালু করুন : সন্ধ্যা ৭টার পরে ফোনে ব্লু লাইট ফিল্টার চালু করতে পারেন (সেটিংস > ডিসপ্লে) 

) অ্যাপ ডায়েট করুন : সোশ্যাল মিডিয়া বা অ্যাপগুলির মধ্যে যেগুলি টক্সিক বলে মনে করা হচ্ছে, সেগুলিকে আনফলো করতে হবে এবং যেগুলি মনকে সুস্থ, সতেজ রাখতে সাহায্য করতে পারে সেইরকম অ্যাপগুলিকে ফলো করতে পারেন (যেমন-ভারতের “দ্য হ্যাপি মাইন্ড” এবং বাংলাদেশের “সাদা মন” বা “হেডস্পেস” ইত্যাদি । 

) ২০-২০-২০ রুল মেনে চলুন : যেকোন কাজই করুন না কেন, প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ২০ সেকেন্ডের জন্য গাছ/আকাশ বা অন্য কোন দিকে তাকান । সারা দিনে কমপক্ষে এই অনুশীলন ২০ বার করুন ।

) শরীর চর্চা অভ্যাস করুন : জিমে যুক্ত হওয়া, সাইক্লিং করা বা সুইমিংয়ের মতো অভ্যাসগুলি শারীরিক এবং মানসিকভাবে আপনাকে ফিট থাকতে সাহায্য করে । কারণ শারীরিক কসরৎ আপনার মন ও শরীরকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে । বাচ্চাদের শরীরচর্চার জন্যে কাছাকাছি কোন ক্লাবে অবসর সময়ে ক্রিকেট বা ফুটবল খেলা শেখানোর জন্যে পাঠাতে পারেন । এর ফলে ছোটদের দেহ-মন বিকশিত হতে পারবে ।

) "ফোন-মুক্ত জোন" তৈরী করুন : বাড়ির মধ্যে একটিফোন মুক্ত জোন” তৈরী করার জন্য ডাইনিং রুম বা বেড রুমের মতো কোন জায়গায় ফোন নিষিদ্ধ করুন । 

) প্রফেশনাল হেল্প নিন : প্রফেশনাল সাহায্য নেওয়ার জন্য ভারতের মানুষরা দিল্লীর “ফর্টিস স্ট্রেস হেল্পলাইন” (৯১-৮৩৭৬৮০৮০২২) এবং বাংলাদেশের মানুষরা ঢাকার “মনন”এর মতো সংস্থাগুলিতে যোগাযোগ করতে পারেন ।

 

 

প্রায়শ: জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)

১) মোবাইল ফোন কি সত্যিই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে? 

উত্তর: কিছু কিছু ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা গেলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন গ্রুপ এবং কিছু অ্যাপ, যারা মানসিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত পরামর্শ দেয়, তাদের ফলো করলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো যেতে পারে ।

  • কিছু অ্যাপে বিনামূল্যে CBT থেরাপি পাওয়া যেতে পারে (যেমন-ভারতের “ওয়াইসা” এবং বাংলাদেশর “মনন”, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে “হেডস্পেস”) ।
  • ভারতের এবং বাংলাদেশের বেশ কিছু হাসপাতাল এখন টেলিমেন্টাল সার্ভিস চালু করেছে (যেমন – AIIMS,NIMHANS,PGI)

বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহ করার সময় একটা তথ্য উঠে এসেছে যা চোখে পড়ার মতো । আর সেটা হলো বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে যারা প্রায় ৬ সপ্তাহ মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অনুশীলন করেছেন তারা প্রায় ৩৮% অবধি উদ্বেগ কমাতে পেরেছেন ।

**** কিন্তু সেক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, কোন ডিজিটাল অ্যাপ বা অন্যান্য উপায়গুলি কখনোই একজন পেশাদার লাইসেন্স প্রাপ্ত থেরাপিস্টের বিকল্প হতে পারে না ।

) স্মার্টফোন আসক্তির প্রাথমিক লক্ষণ কী কী? 

উত্তর) : বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্থান, কাল, বয়স এবং পাত্র ভেদে স্মার্টফোনে আসক্তির লক্ষণগুলি ভিন্ন ভিন্ন হয় । তবে সাধারণভাবে কয়েকটি লক্ষণের ব্যাপারে এখানে আলোচনা করা হলো – 

  • কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে টয়লেটেও ফোন নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যেতে পারে
  • রাত প্রায় ২টো অবধি সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করার মতো অভ্যাস থেকে বিরত থাকতে হবে
  • অফিস কর্মীদের মধ্যে লাঞ্চের সময় সহকর্মীদের উপেক্ষা করে হোয়াটস অ্যাপ নোটিফিকেশনস/ফেসবুক/রিলস দেখার প্রবণতা তৈরী হওয়া
  • ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করা, চোখ শুকনো হয়ে যাওয়া বা মাইগ্রেনের মতো সমস্যা হওয়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফোনে আসক্তির পূর্ব লক্ষণ হতে পারে
  • ফোনের চার্জ শেষ হয়ে আসলে উদ্বেগে হাত কাঁপা/ঘাম হওয়ার মতো লক্ষণ দেখতে পাওয়া । 

এই লক্ষণগুলি সেই ব্যক্তিকে নোমোফোবিয়ার মতো সমস্যা অবধি নিয়ে যেতে পারে ।

৩) রাতে ফোন ব্যবহার ঘুমের কী ক্ষতি করে? 

উত্তর: স্মার্ট ফোনের নীল আলো আমাদের শরীরের মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে । যার ফল হিসাবে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে ।

মানসিক সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে যে, যেসব মানুষ রাত ১১টার পরেও স্মার্টফোন ঘাঁটাঘাঁটি করেন, তাদের রেম ঘুমের (Rapid Eye Movement Sleep) স্তর প্রায় ৫০ মিনিট অবধি কমে যেতে পারে ।

সাধারণভাবে কিভাবে সমাধান করা যেতে পারে – 

  • সন্ধ্যা ৭টার পরে নিজের ফোন সেটিংয়ে গিয়ে “নাইট শিফট/আই কেয়ার” চালু করে দিতে পারেন ।
  • শোওয়ার অন্তত: এক ঘন্টা আগে “ডিজিটাল সূর্যাস্ত” ধরে নিতে হবে – বিছানায় শুয়ে বা শোওয়ার আগে হালকা সঙ্গীত (রবীন্দ্রসঙ্গীতের মতো) বা ইনস্ট্রুমেন্টাল মিউজিক শুনতে পারেন ।

৪) সোশ্যাল মিডিয়া কি সবসময় ক্ষতিকর? 

উত্তর):  সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকা কিন্তু সবসময়ই ক্ষতিকারক না-ও হতে পারে, অনেক সময় ইতিবাচক কমিউনিটির মাধ্যমে মানসিক সাস্থ্যের উন্নতিও করা যেতে পারে –

বিভিন্ন অ্যাপ বা সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে যারা মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে এবং পরামর্শ দেয়, কখনো কখনো সেইসব অ্যাপ বা গ্রুপগুলির মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ে এবং বহু ক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ মেনে চললে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিও ঘটানো যেতে পারে । শুধু খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনভাবে অনলাইন হয়রানির শিকার না হোন । 

৫) ডিজিটাল ডিটক্স কতোদিন করা উচিত? 

উত্তর): ডিজিটাল ডিটক্সের কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই । যদি আপনার উপরের কোন সমস্যাগুলির মধ্যে কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে কোন পেশাদারের পরামর্শ নিতে পারেন । না হলে সাধারণ ভাবে নীচের পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করতে পারেন –

ফোন ছাড়া আপনার পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্প করে সময় কাটান, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গেও আড্ডা মারতে পারেন । সপ্তাহে অন্তত: একটা দিন বা ২৪ ঘন্টা এরকমভাবে সময় কাটানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন ।

মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য বছরে অন্তত: একবার ৫-৭ দিনের জন্য কোন পাহাড়ি লোকেশনে বা সমুদ্রের তীরে পরিবারসহ ঘুরতে যান । সেখানে মোবাইল ফোন দূরে রেখে পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে প্রকৃতির কোলে সময় কাটান ।

৬) বাচ্চাদের ফোন আসক্তি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন? 

উত্তর):  বাচ্চাদের ফোনে আসক্তি তাদের পড়াশোনা বা মেধার জন্য মারাত্মক হতে পারে । তাই তাদের ফোনে আসক্তি যাতে না আসে তার জন্যে ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । নীচের বিকল্পগুলি গ্রহণ করতে পারেন –

  • স্মার্টফোনের অ্যান্ড্রয়েড পরিষেবার ক্ষেত্রে "Google Family Link" দিয়ে অ্যাপ ব্লক করতে পারেন । আই.ও.এস পরিষেবার ক্ষেত্রে "Screen Time > Downtime" সেট করে একই কাজ করতে পারেন ।
  • আপনার বাড়ির কোন নির্দিষ্ট অংশকে বা কোন নির্দিষ্ট ঘরে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করে দিন । সেটা পড়ার ঘর বা ডাইনিং স্পেস হতে পারে এবং নিয়ম পরিবারের সমস্ত সদস্যাদের জন্য একই করুন এবং নিজেও পালন করুন ।
  • পড়াশোনার রুটিনের মতোই বা বাচ্চাদের অন্যান্য কাজের মতো্ই ফোন দেখারও রুটিন করে দিন । তা সে কাজের হোক বা অকাজের ।
  • মানসিক সুস্থতা, শারীরিক সুস্থতা এবং অবসর বিনোদনের জন্য ছবি আকা, গান শেখা, সাতার কাঁটা অথবা নিকটবর্তী কোন ক্লাবে ফুটবল বা ক্রিকেট খেলা শেখার মতো কোন বিকল্প অভ্যাস তৈরী করে দিন ।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরের একটি স্কুল তাদের স্কুলে “ফোন জমা বক্স” প্রকল্প চালু করে তাদের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফলে প্রায় ২০% বাড়াতে পেরেছে ।

৭) অফিসের কাজের চাপে ফোন স্ট্রেস কাটাব কীভাবে? 

উত্তর)অফিসের কাজের চাপের ফলে ফোনের স্ট্রেস কাটানোর জন্যে কিছু উপায় অবলম্বন করতে পারেন –

  • দিনে ৩ বারের জন্য - সকাল ৮টা অবধি, বিকেল ৩টেয় একবার এবং রাত ৮.৩০ য়ের পরে একবার ‘হোয়াটস অ্যাপ মিউট’ এবং নোটিফিকেশন বন্ধ রাখতে পারেন ।
  • এখন প্রায় প্রত্যেকেই ফোনে দু’টি সিম ব্যবহার করেন । কিন্তু আপনি নিশ্চিত করুন, ১ নম্বরের সিম শুধু পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয়-স্বজনের জন্য সেই নম্বর অফিসের কেউ জানবে না । অন্যদিকে সিম ২ এর নম্বরটিও যেন অফিস বা আপনার সহকর্মীরা ছাড়া অন্য কেউ যেন জানতে না পারে । আর সবা্ইকে জানিয়ে রাখুন, যে এই নম্বরটি রাত ৮.৩০ য়ের পরে বন্ধ থাকে । 

এই পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেক প্রফেশনাল ব্যক্তি তাদের স্ট্রেস প্রায় ৩২% অবধি কমাতে পেরেছেন বলে দেখা গেছে ।

 

সব শেষে ..... 

বর্তমান সময়ে মোবাইল তথা স্মার্টফোন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে পড়েছে । অনেক ক্ষেত্রে যেমন পড়াশোনায়, বিনোদনে বা যোগাযোগের ক্ষেত্রে এটি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে বিভিন্ন ভাবে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা দিয়ে থাকে । সুতরাং সচেতন ভাবে ব্যবহার করে এর সুবিধা নেওয়া উচিত, কিন্তু কোনভাবেই এর ব্যবহার গুলির (বিশেষত: বিনোদন মূলক ব্যাপারগুলিতে) আসক্ত হয়ে পড়া ঠিক নয় । পরিবারের সঙ্গে-বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটানো, বিভিন্ন শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখা এবং বিভিন্ন সামাজিক সম্পর্ক ও বন্ধনগুলির মাধ্যমে আমরা একটি ভারসাম্য গড়ে তুলতে পারি । স্মার্টফোনকে ব্যবহার করুন স্মার্ট উপায়ে, যাতে সে আমাদের জীবনে এনে দিতে পারে বিভিন্ন সুবিধা যাতে জীবন যাপন সহজ হয়ে ওঠে, কিন্তু জীবনকে যেন গ্রাস না করে ফেলতে পারে । 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ