ক্রনিক কিডনী ডিসঅর্ডার (CKD) হলো
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে কিডনীর কার্যকারিতা কমে যাওয়া, যদিও বেশিরভাগ
ক্ষেত্রেই এটির প্রাথমিক পর্যায়ে এটি অলক্ষিত থেকে যায় । যদি এর জন্যে ব্যবস্থা না
নেওয়া যায়, তাহলে এটি একজন মানুষের স্বাস্থ্য এবং জীবনের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে
পারে, এমনকি মৃত্যুর দিকে নিয়ে যেতে পারে । এই ব্লগ পোস্টের উদ্দেশ্য হলো - আপনার ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD) হলে
কি হয়, ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD) এর চারটি পর্যায় কি কি, স্টেজ ১ ক্রনিক কিডনী
ডিজিজ (CKD) কি,
ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD) রোগীরা
কত বছর বাঁচে বিষয়গুলি সম্পর্কে জানা এবং বোঝা ।
ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD) কি?
কিডনী হলো মানুষের জীবনের একটি অত্যাবশ্যকীয়
অঙ্গ, যা রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ বার করে, শরীরের অতিরিক্ত জল ও টক্সিনকে ফিল্টার
করে, ইলেকট্রোলাইট নিয়ন্ত্রণ করে এবং কিছু প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরী করে । কিছু
দীর্ঘমেয়াদী রোগ, দীর্ঘমেয়াদী পুষ্টির অভাব. খারাপ অভ্যাস এবং খারাপ জীবনযাত্রা
জনিত কারণে কিডনীর এই ফাংশনগুলি ব্যাহত হতে শুরু করে তখন ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)পরিস্থিতির তৈরী হয় । এদের মধ্যে কিছু
দীর্ঘমেয়াদী রোগের মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং কিছু অটোইমিউন রোগ
যেমন-লুপাস ইত্যাদির কারণে ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD) পরিস্থিতির তৈরী হতে পারার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি তৈরী হয় ।
আর কোন ব্যক্তির কিডনীর সমস্যা হলে
রক্তে বর্জ্য পদার্থ জমা হতে থাকে । যার ফলে হিসাবে সেই ব্যক্তি ক্লান্তি, শরীরে
ফোলাভাব এবং প্রস্রাবের পরিবর্তনের মতো লক্ষণ অনুভব করতে পারেন । গুরুতর
ক্ষেত্রবিশেষে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না করলে ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD), কিডনী ফেলিওরের পর্যায় অবধি নিয়ে যেতে পারে
। যার ফলে জীবন টিকিয়ে রাখার জন্যে ডায়ালাইসিস বা কিডনী প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত
নিতে হতে পারে ।
ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-র চারটি পর্যায়
ক্রনিক কিডনী ডিজিজকে (CKD) গ্লোমেরুলার ফিল্টারেশন রেট (GFR)-য়ের উপর ভিত্তি করে চারটি পর্যায়ে শ্রেনীবদ্ধ
করা হয়ে থাকে । গ্লোমেরুলার ফিল্টারেশন রেট (GFR) হলো্ একটি পরিমাপ যা বোঝায় যে কিডনী কতোটা
দক্ষতার সাথে রক্ত ফিল্টার করছে বা করতে পারছে । আর এই পরিমাপ বা পর্যায়গুলি রোগের
তীব্রতা নির্ধারণ করতে এবং উপযুক্ত চিকিৎসার কাজে ডাক্তারদের সাহায্য করে ।
পর্যায় ১ : কিডনির হালকা ক্ষতি (GFR ≥ 90 ml/min)
এটি হল ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের সবচেয়ে প্রাথমিক স্তর, যেখানে কিডনী
সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও ভালোভাবে কাজ করে । আসলে ডায়াবেটিস বা উচ্চ
রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং তাদের চিকিৎসা উপরে চাপ ফেলতে পারে । আর
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ জানতে বা বুঝতেও পারে না যে তার শরীরের ক্রনিক কিডনী
ডিজিজ (CKD)-য়ের মতো পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে, কারণ বেশিরভাগ
ক্ষেত্রেই সেরকম কোন লক্ষণীয় লক্ষণ দেখা যায় না ।
এই পর্যায়ের মূল বৈশিষ্ট্য :
(ক) কিডনীর স্বাভাবিক কার্যকারিতা বজায়
থাকে
(খ) পরীক্ষায় প্রস্রাবে প্রোটিন পাওয়া
যায় (প্রোটিনুরিয়া), যা কিডনীর ক্ষতির প্রাথমিক লক্ষণ
(গ) তেমন কোন উপসর্গ দেখা যায় না, খুব
হালকা কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে
ফোকাস – ক্রনিক কিডনী ডিজিজের এই পর্যায়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত কিডনীর ক্ষতির অন্তর্নিহিত কারণগুলি কি এবং তাদের সঠিক পথে পরিচালনা করা বা প্রতিরোধ করা ।
পর্যায় ২ : কিডনির কার্যকারিতা অল্প কমে যাওয়া (GFR 60–89 ml/min)
এই পর্যায়ে কিডনীর কার্যকারিতা কমে
যায়, তবে বেশিরভাগ মানুষই উপসর্গহীন থাকেন । রক্ত বা প্রস্রাব পরীক্ষায়
ক্রিয়েটিনিন-য়ের বেশি মাত্রা বা প্রস্রাবে প্রোটিন পাওয়ার মতো অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য
করা যেতে পারে ।
এই পর্যায়ের মূল
বৈশিষ্ট্য :
(ক) কিডনীর ফিল্টার করার ক্ষমতা
সামান্য কমে যায়
(খ) সামান্য রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া বা
শরীর ফুলে যাওয়ার মতো ঘটনা দেখা দিতে পারে
(গ) অত্যন্ত ন্যূনতম লক্ষণ দেখা যেতে
পারে
ফোকাস – রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে কিডনীর ক্ষতির অগ্রগতি ধীর করা যেতে পারে ।
পর্যায় ৩ : মাঝারি ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD) (GFR 30–59 ml/min)
ক্রনিক কিডনী ডিজিজের তৃতীয় পর্যায়ে
কিডনীর কার্যকারিতা মাঝারিভাবে কমে যায় এবং উপসর্গ দেখা দিতে থাকে । উপসর্গগুলির
মধ্যে শরীরে ক্লান্তি, প্রস্রাবের পরিবর্তন এবং শরীরের ফোলাভাব থাকতে পারে ।
এই পর্যায়ের মূল
বৈশিষ্ট্য :
(ক) গ্লোমেরুলার ফিল্টারেশন রেট (GFR)-য়ের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে
(খ) রক্তে বর্জ্য পদার্থ জমা হতে থাকে (ইউরেমিয়া)
(গ) শরীরের প্রয়োজনীয় খনিজগুলির অভাবে হাড়ের সমস্যা
বা হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে
ফোকাস – কিডনীর ক্ষতির অগ্রগতির হার ধীর করতে এবং উদ্ভূত শারীরিক জটিলতার মোকাবিলা করার জন্যে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং একটি লক্ষ্যপূর্ণ চিকিৎসা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ।
পর্যায় ৪ : ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-র গুরুতর অবস্থা (GFR <30 ml/min)
ক্রনিক কিডনী ডিজিজের চতুর্থ পর্যায়টি
একটি গুরুতর এবং জটিল পর্যায় । এই পর্যায়ে কিডনীর কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে কমে
যায় । শরীরে লক্ষণগুলি আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং রক্তাল্পতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং
হৃদরোগের বিভিন্ন গুরুতর সমস্যার জটিলতার ঝুঁকি বাড়তে থাকে ।
এই পর্যায়ের মূল
বৈশিষ্ট্য :
(ক) কিডনীর কার্যকারিতা গুরুতরভাবে কমে
যায়
(খ) মনোযোগ করার অসুবিধা, শরীরে
অস্থিরতা এবং বমি বমি ভাবের মতো উল্লেখযোগ্য লক্ষণগুলি দেখা দেয়
(গ) কিডনী ফেলিওরের মারাত্মক ঝুঁকি দেখা
দেয়
ফোকাস – কিডনীর ডায়ালাইসিস করা বা কিডনীর প্রতিস্থাপন করার মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজন ।
স্টেজ ১ ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ে কী ঘটে?
ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের
স্টেজ ১ বা প্রথম পর্যায় প্রায়শ:ই উপেক্ষিত থেকে যায় । কারণ এই পর্যায়ের একজন
মানুষের কিডনী প্রায় সুস্থ মানুষের কিডনীর মতোই কাজ করে, যদিও এই পর্যায়ে কিডনী
সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় । পাশাপাশি প্রায় কোনরকম উপসর্গ লক্ষ্য করা যায় না । রক্তে
শর্করার মাত্রার খারাপ নিয়ন্ত্রণ, হাইপারটেনশনের চিকিৎসায় উদাসীনতা এবং জেনেটিক
প্রবণতার কারণে কিডনীর প্রাথমিক ক্ষতি হতে পারে ।
স্টেজ ১ ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের লক্ষণগুলি :
(ক) বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রায় কিছুই লক্ষণ দেখা
যায় না, কিছু ক্ষেত্রে হালকা লক্ষণ দেখা দিতে পারে
(খ) কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রস্রাবে প্রোটিন
(প্রোটিনুরিয়া) দেখা দিতে পারে
(গ) রক্তচাপের সামান্য হেরফের ঘটতে পারে
স্টেজ ১ ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের নিয়ন্ত্রণের কিছু লাইফস্টাইল টিপস
:
(১) ব্লাড সুগার এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখূন : ব্লাড সুগার এবং ব্লাড প্রেশার কিডনীর ক্ষতির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দুটি কারণ । সুতরাং এই দুটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন ।
(২) কিডনীর উপযোগী খাদ্য গ্রহণ করুন : লবণ কম খান, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের পরিমাণ সীমিত করু এবং দৈনিক খাদ্যে ফল ও শাক-সবজির পরিমাণ বাড়ান ।
(৩) শারীরিক সক্রিয়তা বাড়ান : নিয়মিত ব্যয়াম রক্তসঞ্চালনের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কিডনীর সামগ্রিক কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে । সুতরাং শারীরিক সক্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করুন ।
(৪) পরিমিত জল খান : আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী জল পান করুন । মনে রাখবেন, এই পর্যায়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত হাইড্রেশন এড়িয়ে যাওয়াই কিডনীর জন্যে ভালো ।
(৫) ধূমপান ত্যাগ করুন : ধূমপান শরীরের রক্তনালীর ক্ষতি করে, যা কিডনীর ক্ষতিকে অতিরিক্ত গতি দিতে পারে । তাই ধূমপান ত্যাগ করাই শ্রেয় ।
মনে রাখবেন, সঠিক সচেতনতা, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ
এবং তাদের কার্যকারিতাকে রূপ দানের মাধ্যমে ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের
প্রথম পর্যায় থেকে কিডনীর আরো খারাপ হওয়াকে ধীর করা বা প্রতিরোধ করা সম্ভব ।
ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)- র রোগীরা কতদিন বাঁচে ?
ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের
রোগীদের বাঁচা-মরা সমস্যার সনাক্তকরণের সময় এবং সমস্যার পর্যায়, তাদের অন্তর্নিহিত
স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার উপরে তাদের আনুগত্য বা শৃঙ্খলার উপরে নির্ভর করে পরিবর্তিত
হয় । কিন্তু অবশ্যই এটা মনে রাখা দরকার, ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের
সনাক্তকরণ হওয়া মানেই মৃত্যুর পরোয়ানা পেয়ে যাওয়া নয় । সঠিক সময়ে সনাক্তকরণ, সঠিক
সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার সঠিক পরিবর্তনের মাধ্যমে
কিডনীর খারাপ হওয়ার গতিকে ধীর করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে প্রতিরোধ করাও সম্ভব ।
যেসব বিষয়গুলি ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের
রোগীদের বাঁচা-মরার ব্যাপারটিকে প্রভাবিত করতে পারে, তাদের কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে
এখানে আমরা আলোচনা করলাম –
(১) বয়স এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য – সাধারণভাবে অল্পবয়সী রোগীদের ক্ষেত্রে কোন অতিরিক্ত অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য-সমস্যা না থাকায়, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসার ফলাফল ভালো হয় ।
(২) সনাক্তকরণের পর্যায় – যদি ক্রনিক
কিডনী ডিজিজের (CKD পর্যায় ১-২) একদম প্রারম্ভিক পর্যায়ে সমস্যার
সনাক্তকরণ করা যায় এবং কার্যকরীভাবে এর নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা করা যায়, তাহলে সমস্যাটি
ব্যক্তির আয়ুর উপরে খুব সামান্যই প্রভাব ফেলতে পারে । আবার অন্যদিকে যদি তার
বিপরীত হয়, অর্থাৎ যদি সমস্যার অনেকটা অগ্রগতির অবস্থায় (পর্যায় ৩-৪) সনাক্তকরণ
হয়, তাহলে ব্যক্তির আয়ু কমিয়ে দিতে পারে, বিশেষত: যদসে্েই ব্যক্তির ক্ষেত্রে হৃদরোগের
মতো জটিলতা দেখা দেয় ।
(৩) চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার অভ্যাসের পরিবর্তন – সঠিক স্বাস্থ্যকর খাদ্য, নিয়মিত ব্যয়াম, সঠিক অভ্যাস এবং জীবনযাত্রার বিভিন্ন পরিবর্তন ক্রনিক কিডনী ডিজিজের রোগীদের জীবনে অত্যন্ত জরুরী । বিশেষত: যদি সেই ব্যক্তির ডায়াবেটিস বা রক্তচাপের মতো অন্তর্নিহিত সমস্যা থাকে, তাহলে এইসব পরিবর্তনগুলি রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্যে ওষুধগুলির প্রয়োগের দরুণ কিডনীর ক্ষতির অগ্রগতিকে ধীর করতে পারে ।
মোটামুটিভাবে পর্যায় অনুযায়ী
সনাক্তকরণের দরুণ আমরা কোন ব্যক্তির আনুমানিক গড় আয়ুর একটি বিবরণ দেওয়ার প্রয়াস
করলাম । তবে মনে রাখবেন, এটি একটি আনুমানিক চিত্র । ব্যক্তিবিশেষে তার অন্তর্নিহিত
স্বাস্থ্য-সমস্যা, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অবস্থা, উদ্ভূত জটিলতা, তার জীবনযাত্রা
ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উপরে নির্ভর করে ।
পর্যায় অনুযায়ী অনুমানিক গড় আয়ু :
(ক) পর্যায় ১ ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD) : যদি
এই পর্যায়ে সনাক্তকরণ করা যায়, সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং চিকিৎসায়, আয়ু
প্রায় স্বাভাবিকের কাছাকাছি ।
(খ) পর্যায় ২ ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD) :
সমস্যার এই পর্যায়ে সনাক্তকারী ব্যক্তি যদি কোন জটিল অন্তর্নিহিত সমস্যা না থাকে
এবং সঠিক চিকিৎসার প্রয়োগ, খাদ্যাভ্যাসের সঠিক পরিবর্তন এবং জীবযাত্রায় সঠিক
শৃঙ্খলার মাধ্যমে বহু বছর বাঁচতেই পারেন ।
(গ) পর্যায় ৩ ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD) :
এই পর্যায়ে সনাক্তকারী ব্যক্তির আয়ু তার সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যের
অন্যান্য দিকগুলোর উপরে নির্ভর করে আগের পর্যায়গুলির তুলনায় কিছুটা কমতে পারে ।
(ঘ) পর্যায় ৪ ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD) :
এই পর্যায়ে কোন ব্যক্তির সমস্যার সনসক্তকরণ হলে তার আয়ু ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে
পারে । যদিও উদ্ভূত জটিলতার মোকাবিলা এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তার আয়ুর বেশ কিছু
মূল্যবান সময় বাঁচিয়ে তোলা যেতে পারে । কিন্তু তার জন্যে চিকিৎসার উপর তার আনুগত্য
এবং জীবনযাত্রায় ও খাদ্যাভ্যাসে সঠিক শৃঙ্খলাবোধ আনা খুবই জরুরী ।
চূড়ান্ত চিন্তা : ক্রনিক কিডনী ডিজিজের (CKD) সঙ্গে বাঁচা
ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD),
একটি গুরুতর কিন্তু নিয়ন্ত্রণযোগ্য সমস্যা, বিশেষত: যদি সঠিক সময়ে সনাক্তকরণ করা
যায় । এই সমস্যার পর্যায়গুলিকে বোঝা, সক্রিয় সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং পদক্ষেপ গ্রহণ
কিডনীর অবস্থা খারাপ হওয়ার অগ্রগতিকে ধীর করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য গড়ে
তুলতে পারে । যদি কেউ ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের সমস্যায় আক্রান্ত হন, তাহলে চিকিৎসকদের
পরামর্শ অনুসরণ করা, সঠিক ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন করা,
নিয়মিত চেক-আপ করানো ইত্যাদি বিষয়গুলি আপনার আয়ু দীর্ঘ করার জন্যে একেকটি
গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে ।
তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তার
অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ । যদি আপনি জানতে পারেন যে আপনি ঝুঁকির মধ্যে আছেন বা
ইতিমধ্যেই আপনার সমস্যা নির্ণয় হয়েছে, তাহলে মনে রাখতে হবে যে, আজকের ছোট ছোট পদক্ষেপ
গ্রহণ এবং পরিবর্তনই কিন্তু আগামীকাল আপনাকে আরো ভাল স্বাস্থ্যের দিকে নিয়ে যেতে
পারে ।
ক্রনিক কিডনী ডিজিজ (CKD)-য়ের
প্রগতিশীল অবস্থায় বা
কিডনি ফেলিওরে রোগীদের জন্যে ডায়ালাইসিস বা কিডনী প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থার প্রয়োজন
হতে পারে । অযথা আতঙ্কিত না হয়ে এই সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত
গ্রহণ এবং সঠিক চিকিৎসার সাহায্যে এবং পরামর্শকারীদের নির্দেশ অনুযায়ী জীবনযাত্রা
এবং খাদ্যাভ্যাসের সঠিক পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আয়ুর সময়কাল বাড়ানো যেতেই পারে ।
আমরা সেই সচেতনতা প্রসারের প্রয়াস করছি মাত্র, যদি এই পোস্ট পড়ে আপনার ভালো লাগে
তাহলে অন্যদের শেয়ার করার অনুরোধ রইলো ।
মনে রাখবেন, আপনার কিডনি হল আপনার
শরীরের ফিল্টার—তার যত্ন নিন, তাহলে সেও আপনার যত্ন নেবে ।
0 মন্তব্যসমূহ