সম্প্রতি বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে জৈবিক খাদ্য এবং সাধারণ উপায়ে স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার প্রবণতা বেড়েছে । আর সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সুপারফুড (Superfood) এবং খাদ্য পরিপূরক (Food Supplement) ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার । কিন্তু সুপারফুডগুলি ঠিক কি্ এবং সেগুলিকে ব্যবহার করলে বা আমাদের দৈনিক খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে সেগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করলে আামদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কি লাভ দিতে পারে সেই সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই এখনো কোন সুনিশ্চিত ধারণা বা সচেতনতা নেই । তাই আমরা এ্ই ব্লগ পোস্টটিতে সুপারফুড কি, কি কি বৈশিষ্ট্য থাকলে একটি খাদ্যকে সুপারফুড বলা যেতে পারে, কিছু পরিচিত সুপারফুড সম্পর্কে অতি সংক্ষিপ্ত পরিচিত প্রদান করা, সুপারফুড গ্রহণের সুবিধা, কোন্ পরিপূরককে একটি সুপারফুড বিবেচনা করা যেতে পারে, পরিপূরক বনাম সুপারফুড, কিছু পরিপূরক যারা সুপারফুড হিসাবে বিবেচিত হতে পারে ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবো ।
সুপারফুড কি
সুপারফুড হলো এমন একটি খাবার, যেগুলোতে পুষ্টিগুণসম্পন্ন উপাদান এবং উপকারী
যৌগগুলি অসাধারণভাবে বেশি পরিমাণে বিদ্যমান থাকে । যদিও সুপারফুডের বিশেষ কোন
নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা নেই, তবুও সুপারফুডগুলি সাধারণত তাদের ঘন পুষ্টির
প্রোফাইলের জন্য স্বীকৃত হয়, যা মৌলিক পুষ্টির বাইরেও
স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা দিতে পারে বা পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে পারে । এই
খাবারগুলি প্রায়শ:ই ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে যা
সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা প্রদান করার ক্ষমতা রাখে ।
কি কি বৈশিষ্ট্য থাকলে সুপারফুড বলা যায়
যেহেতু
সুপারফুডের কোন নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, তাই কয়েকটি বৈশিষ্ট্য
বিচার করে কোন খাবারকে সুপারফুড বলা যেতে পারে । নীচে সেই বৈশিষ্ট্যগুলো সমকের্কে
সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো -
১) পুষ্টির ঘনত্ব : সুপারফুডগুলি ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইটোকেমিক্যাল সহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি-উপাদানের দ্বারা সমৃদ্ধ, যারা আমাদের শরীরকে পুষ্টির ঘাটতি মিটিয়ে বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়াকে সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে ।
২) অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য : বেশিরভাগ সুপারফুডগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যারা কোষের মধ্যেকার অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায় ।
৩) প্রদাহ বিরোধী প্রভাব : সাধারণত: সুপারফুডগুলির মধ্যে প্রদাহ বিরোধী গুণ থাকে, যা শরীরের প্রদাহ প্রশমিত করতে সাহায্য করতে পারে - যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে যুক্ত ।
৪) হার্টের স্বাস্থ্যের উপকারিতা : সুপারফুডগুলিতে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকে এবং রক্তচাপ কমিয়ে কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে অর্থাৎ হার্টের কার্যক্ষমতাকে ঠিক রাখে ।
৫) হজমের স্বাস্থ্য : সুপারফুডগুলি সাধারণত: ফাইবার এবং প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার হয়ে থাকে, যার ফলে ইনটেস্টাইনকে ভালো রাখে এবং হজম-ব্যবস্থার উন্নতি ঘটায় ।
কিছু পরিচিত সুপারফুড
খাদ্যতালিকায় সুপারফুডকে অর্ন্তভুক্ত করে পুষ্টির ঘাটতি মেটানো বা পুষ্টির
পরিমাণ বাড়িয়ে সুস্থ এবং নীরোগ থাকার প্রয়াস করা একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে । বিবেচনার
জন্যে আমরা কিছু সুপারফুডের পরিচিতি নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করলাম -
১) বেরি : স্ট্রবেরী, ব্লু-বেরী, এবং অ্যাকাই বেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিনে ভরপুর ।
২) সবুজ শাক-সব্জি : পালং শাক, কেল এবং সুইস চার্ডে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, কে এবং আয়রনের মতো খনিজ উপাদান থাকে ।
৩) বাদাম এবং বীজ : বিভিন্ন রকমের বাদাম, আখরোট, চিয়া বীজ এবং ফ্ল্যাক্সসিড স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন এবং ফাইবার সরবরাহ
করে।
৪) ফ্যাটি মাছ : স্যালমন, ম্যাকরেল এবং সার্ডিন জাতীয় মাছ ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিডের চমৎকার উৎস।
৫) কুইনোয়া : কুইনোয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রয়োজনীয়
খনিজ পদার্থ এবং প্রোটিন থাকে ।
৬) অ্যাভোকাডো : এটি স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার এবং বিভিন্ন ভিটামিন দ্বারা সমৃদ্ধ,
এককথায় অ্যাভোকাডো যে কোনও খাবারের একটি বহুমুখী সংযোজন।
৭) হলুদ : হলুদ তার মধ্যে থাকা সক্রিয় যৌগ কারকিউমিনের জন্য সুপরিচিত, হলুদ প্রদাহ-বিরোধী উপকারিতা প্রদান করে।
৮) গ্রীক ইয়োগার্ট : এটি স্বাস্থ্যকর প্রোটিন এবং
প্রোবায়োটিক দ্বারা সমৃদ্ধ, ফলে অন্ত্রকে ভালো রাখতে, তার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে দারূন উপকারী ।
৯) মিষ্টি আলু : মিষ্টি আলু বিটা-ক্যারোটিন, ফাইবার এবং ভিটামিনে ভরপুর । এটি একটি
পুষ্টিকর কার্বোহাইড্রেটের উৎস।
১০) গ্রিন টি : গ্রিন টি ক্যাটেচিন নামক জৈব উপাদানে সমৃদ্ধ । এটি
তার অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য এবং বিপাক-বর্ধক গুণের জন্য পরিচিত।
সুপারফুড গ্রহণের সুবিধা
আমাদের দৈনিক খাদ্যতালিকায় সুপারফুডগুলির মধ্যে কিছুকে অন্তর্ভুক্ত করলে
আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে তারা বহু লাভ দিতে পারে, যেমন –
১) বর্ধিত পুষ্টি গ্রহণ : খাদ্যগ্রহণ করার পরেও পুষ্টির
ঘাটতি থেকে গেলে সুপারফুডগুলি প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে শরীরের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে পারে ।
২) দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি হ্রাস : সুপারফুডগুলির মধ্যে
থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগগুলি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
৩) শক্তির স্তর বজায় রাখা : দৈনিক পুষ্টি-সমৃদ্ধ খাবার খেলে
সারাদিন ধরে শক্তির স্তর বজায় রাখা সম্ভব হয়, যার ফলে মানুষ কার্যক্ষম হয়, জীবন
প্রাণবন্ত এবং আনন্দময় হয়ে ওঠে ।
৪) হজমের উন্নতি ঘটায় : বেশিরভাগ সুপারফুড ফাইবার এবং
প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ,
যার ফলে এরা হজমের উন্নতি ঘটায় এবং ইনটেস্টাইনকে সুস্থ, সবল রাখে ।
৫) ওজন বজায় রাখা : যেসব খাবারে ফাইবার এবং প্রোটিন বেশি থাকে সেগুলি
আমাদের বেশিক্ষণ ধরে পেট ভরার অনুভূতি দেয়, ফলে পরোক্ষভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৬) ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্য : সুপারফুডে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন
এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টগুলির জন্যে এরা আমাদের ত্বকের এবং চুলের স্বাস্থ্যের
উন্নতি ঘটানোর ক্ষমতা রাখে ।
কোন পরিপূরককে কি সুপারফুডরূ বলা যেতে পারে
আসলে "সুপারফুড" শব্দটি
প্রায়শই এমন খাবারগুলিকে বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয় যা সাধারণত ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য
যৌগগুলিতে সমৃদ্ধ এবং সামগ্রিক সুস্থতায়
অবদান রাখে । কিন্তু সুপারফুডের ধারণাটি সাধারণভাবে পূর্ণ খাবারের (Whole Food) সাথে যুক্ত - যেমন ফল, শাকসবজি, বাদাম, বীজ এবং শস্য ইত্যাদি । তাই প্রশ্ন ওঠে - কোন সম্পূরককে কি তাহলে সুপারফুড
হিসাবে বিচেনা করা যেতে পারে ?
সুপারফুড : সুপারফুডগুলি হলো সাধারণত সম্পূর্ণ খাদ্য (Whole Food), প্রক্রিয়াবিহীন খাবার যা একটি সম্পূর্ণ পুষ্টির প্রোফাইল প্রদান করে, যার মধ্যে থাকে ফাইবার এবং অন্যান্য উপাদান যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের সুবিধার
জন্য কাজ করতে পারে ।
পরিপূরক : এগুলি সবসময় সম্পূর্ণ
খাদ্য না-ও হতে পারে, কিছু সম্পূর্ণ খাদ্যের নির্যাস বা অন্যান্য বোটানিক্যাল
পদার্থ থেকে নিষ্কাশন করা বা ফলের বা বীজের বা উদ্ভিদের কোন অংশও হতে পারে ।
কিন্তু এগুলিও তাদের পুষ্টির প্রোফাইলের জন্যে সুপরিচিত ।
উপরের আলোচনার থেকে আমরা এই ধারণায় পৌঁছাতে পারি যে, কিছু খাদ্য -পরিপূরক, সুপারফুডের মানদণ্ডের সাথে অবশ্যই মানানসই
হতে পারে, বিশেষ করে যদি সেগুলিতে সুপারফুডগুলিতে
পাওয়া পুষ্টির ঘনীভূত রূপের পর্যাপ্ত মাত্রা উপস্থিত থাকে। যাইহোক, সেইক্ষেত্রে সম্পূরকগুলিকে সুপারফুড
হিসাবে বিবেচনার জন্যে কয়েকটি বিষয় দেখে নেওয়া প্রয়োজন । যেমন –
১) আমাদের শরীর খাদ্য পরিপূরকগুলির চেয়ে সম্পূর্ণ খাবার থেকে পুষ্টিকর
উপাদানগুলিকে আরও কার্যকরভাবে শোষণ করতে পারে ।
২) সম্পূর্ণ খাদ্যে প্রায়ই পুষ্টি-উপাদানগুলি জটিল মিশ্রণ অবস্থায় থাকে, যা
স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য একসাথে কাজ করে । সম্পূরক খাদ্যের মধ্যে তা হারিয়ে
যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় ।
৩) খাদ্য সম্পূরকগুলি সম্পূর্ণ খাদ্যের তুলনায় কম নিয়ন্ত্রিত হয়, যা তাদের
গুণমান এবং ক্ষমতার উপর নির্ভর করে ।
কিছু পরিপূরক যারা সুপারফুড হিসাবে বিবেচিত হতে পারে
যদিও সমস্ত খাদ্য পরিপূরককে সুপারফুড হিসাবে বিবেচনা করা যায় না, তবে অনেকগুলি খাদ্য পরিপূরকই তাদের ব্যতিক্রমী পুষ্টির প্রোফাইল এবং
স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য সুপারফুড হিসাবে স্বীকৃত হয় । যেমন –
১) স্পিরুলিনা : প্রোটিন, ভিটামিন (বিশেষ করে B12), আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি নীলাভ-সবুজ শেওলা হলো স্পিরুলিনা ।
এটি ইমিউন ফাংশন সমর্থন করতে পারে এবং প্রদাহ কমাতে পারে । তাছাড়াও বাড়তি শক্তি
প্রদান এবং শরীরে আয়রনের ঘাটতি মেটানোর
মতো আরো অনেক লাভ দিয়ে থাকে ।
২) মরিন্ডা সিট্রিফোলিয়া বা ননী : মরিন্ডা সিট্রিফোলিয়ার পরিচিত নাম হলো ননী । এটি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ছাড়াও বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং বিভিন্ন ফাইটোকেমিক্যালস দ্বারা সমৃদ্ধ । এর বিশাল এবং সমৃদ্ধ পুষ্টির প্রোফাইল আমাদের শরীর রক্ষা এবং স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে প্রচুর সুবিধা দিয়ে থাকে ।
৩) মোরিঙ্গা : মোরিঙ্গা বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ এবং একটি পুষ্টির পাওয়ার হাউস
হিসাবে সু-পরিচিত । এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং প্রদাহ কমানো ছাড়াও উচ্চ
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং হার্ট ভালো রাখতে বিশেষ লাভ দেয় ।
৪) অশ্বগন্ধা : অস্বগন্ধা একটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক ভেষজ, যা তার অ্যাডাপ্টোজেনিক গুণের জন্যে
মানসিক চাপ কমানো বা স্ট্রেস কমানোর জন্যে, জীবনীশক্তি বাড়ানোর জন্যে বিখ্যাত ।
শুধু তাই নয়, অশ্বগন্ধা ঘুম বাড়ানোর জন্যে এবং নার্ভাস ফাংশনের উন্নতির জন্যেও
প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে ।
৫) ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড : প্রধানত: মাছের তেল বা শ্যাওলা-ভিত্তিক
খাদ্য পরিপূরক গুলি এর উৎস । তবে ফ্লাক্স সীড, অ্যালো ভেরা জুসের বিভিন্ন উৎসেও এর
অস্তিত্ব দেখা যায় । হার্ট এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য এটি অপরিহার্য এবং
প্রদাহ কমানোর ক্ষমতা রাখে ।
৬) গ্রিন টি নির্যাস : গ্রিন টি-য়ের নির্যাস প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ-বিশেষ করে
ক্যাটেচিন এবং বিপাক ক্ষমতার বৃদ্ধি, ওজন
নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করার জন্যে সুপরিচিত ।
৭) ক্লোরেলা : এটি এক বিশেষ ধরনের ধরনের শৈবাল, যা তার ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্য এবং উচ্চ
ক্লোরোফিল সামগ্রীর জন্য পরিচিত । এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এবং শরীরের জন্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টি
সরবরাহ করতে পারে ।
৮) ম্যাকা রুট : বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ এবং প্রচুর অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে । প্রায়শ:ই এটিকে শক্তি এবং স্ট্যামিনা বৃদ্ধির জন্যে
ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।
৯) হলুদ (কারকিউমিন) : হলুদের মধ্যে থাকে একটি সক্রিয়
যৌগ-কারকিউমিন, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট,
প্রদাহ কমাতে, লিভারে কার্যক্ষমতা এবং তার মেরামতিতে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি
কমাতে হলুদ দারুণভাবে কার্যকরী ।
১০) প্রোবায়োটিক : এটি আসলে কিছু জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া, যা বিশেষ করে
অন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে দারূণ কার্যকরী । তাড়াড়াও হজম শক্তি বাড়াতে
এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে ।
সুপারফুড গুলি তাদের বিশাল পুষ্টি-উপাদানের ভান্ডার নিয়ে আমাদের শরীরকে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে প্রচুর সুবিধা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এবং দৈনিক ডায়েটের মধ্যে এদের গ্রহণের মাধ্যমে মানুষ নিজেদের সুস্থ, সবল এবং নীরোগ রাখতে পারেন । একটি সুষম খাদ্য বা ব্যালান্স ডায়েট গ্রহণ হলো সুস্থতার চাবিকাঠি । মনে রাখা দরকার, খাদ্য পরিপূরকগুলির মধ্যে বেশ কিছু পরিপূরক যোগ্যতার মাপকাঠিতে সুপারফুডের সমকক্ষ, কিন্তু শুধুমাত্র খাদ্য পরিপূরক বা সুপারফুড গ্রহণের মাধ্যমে কোনদিন শরীর তার সামগ্রিক পুষ্টি পেতে পারে না । দৈনিক খাদ্যগ্রহণের পরেও পুষ্টির ঘাটতি মেটানোর চাহিদা পূরণের জন্যে এদের ব্যবহার করা যেতে পারে । তবে খাদ্য পরিপূরক বা সম্পূর্ণ খাদ্যগুলি গ্রহণের মাধ্যমে আমরা স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো, স্বাস্থ্যরক্ষা বা নিজেদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে পারি । তবে এগুলিকে ব্যবহারের সময় এদের বৈচিত্র্য, যথাযথ ব্যবহার এবং সংযমের কথা খেয়াল রাখা দরকার । তাই কোন পরিপূরক বা সুপারফুড গ্রহণের আগে কোন ডায়েটেশিয়ান বা এক্সপার্টের পরামর্শে এবং তত্ত্বাবধানে এগুলি ব্যবহার শুরু করা উচিত ।
আশা করি এই ব্লগ পোস্টটি পড়ে সুপারফুড বা খাদ্য-পরিপূরক সম্পর্কে কিছুটা সচেতনতা আনতে সক্ষম হবে এবং আপনাকে সুস্থ থাকতে ও সুস্থভাবে বাঁচতে সহায়ক হবে । পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ এবং যদি আপনি বিষয়টিকে পছন্দ করেন, অনুগ্রহ করে অন্যদের সচেতন করে তোলার জন্যে তাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করার জন্য শেয়ার করার অনুরোধ জানাই ।
0 মন্তব্যসমূহ