Header Ads Widget

শতভরী : মহিলাদের জন্য একটি প্রাকৃতিক সমাধান

 

প্রাকৃতিক বা ভেষজ প্রতিকারের দুনিয়ায় শতভরী একটি শক্তিশালী এবং বহুমুখী নিরাময়কারী হিসাবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে । বিশেষত: ভারতীয় প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যার জন্য বহু শতাব্দী ধরে শতভরী সুনামের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়ে আসছে । বৈজ্ঞানিক ভাষায় শতভরী Asparagus Racemosus  নামে পরিচিত । এর শিকড়ের চরিত্রের কারণে সংস্কৃত সাহিত্যে একে “শত শিকড়যুক্ত উদ্ভিদ” হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে । বহু প্রাচীন গ্রন্থে শতভরীকে তার বহুমূখী ভেষজ বৈশিষ্ট্যের জন্য একে “ভেষজ রানী” বলেও্ উল্লেখ করা হয়েছে । বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই উদ্ভিদ বিভিন্ন নামে পরিচিতি লাভ করেছে, যেমন – অ্যাসপারাগাস ফার্ন, ইন্ডিয়ান অ্যাসপারাগাস, স্প্যারো গ্লাস, বাটারমিল্ক রুট, ওয়াটার রুট, ক্লাইম্বিং অ্যাসপারাগাস, ইয়েলো অ্যাসপারাগাস, ওয়াইল্ড অ্যাসপারাগাস, মাং টে এবং শতওয়াড়ি ইত্যাদি । এই উদ্ভিদের শিকড় তার অসামান্ এবং অনন্য ভেষজ গুণাবলীর জন্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এক অসাধারণ মর্যাদা লাভ করেছে । চলুন একবার আলোচনা করে নেওয়া যাক শতভরী কি, শতভরী কি কাজে লাগে, শতভরী বিখ্যাত কেন বা তার ভেষজ গুণাবলী কি কি, মহিলাদের জন্য শতভরী কি কাজে লাগে বা কার শতভরী ব্যবহার করা উচিত নয় এবং কিভাবে কার ব্যবহার করা উচিত ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি ।

কি কি প্রাকৃতিক সম্পদ শতভরীকে সমৃদ্ধ করেছে

প্রকৃতি শতভরীকে প্রচুর পরিমাণে জানা-অজানা ফাইটোকেমিক্যালস দিয়ে সমৃদ্ধ করেছে, যার জন্যে এই গাছের মধ্যে কিছু অনন্য ঔষধি গুণ তৈরী হয়েছে । এর প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদানগুলির মধ্যে যেমন রয়েছে প্রাকৃতিক স্টেরয়েডাল স্যাপোনিন, যা রাসায়নিক জগতে স্যাটাভারিন নামেও পরিচিত । তাছাড়া অলিগোস্যাকারাইডস, মিউকিলেজ, আইসোফ্ল্যাভোনন, অ্যালকালয়েড, অ্যাসপারাজিন, আর্জিনিন, টাইরোসিন, রেজিন, ট্যানিন এবং বেশ কিছু ফ্ল্যাভনয়েড যেমন রেটিন, কেমফেরল এবং কোয়ারসেটিন ও সিটোস্টেরলের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্টেরলও এর মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় ।

এই সমস্ত উপাদান ছাড়াও শতভরী গাছটি ম্যাঙ্গানীঝ, কপার, জিঙ্ক, কোবাল্ট, পটাশিয়াম, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো নিভিন্ন খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ । তাছাড়াও ভিতামিন এ, বি১, বি২, ভিটামিন ই, অ্যাসকরবিক অ্যাসিডের উপস্থিতি এবং সেই সঙ্গে গামা-লিনোলিক অ্যাসিডের মতো অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিডের উপস্থিতি একে এক অসাধারণ ভেষজ গুণাবলী দান করেছে ।

শতভরীর পুষ্টি মূল্য সারণী (প্রতি ১০০ গ্রামে)

ক্রম নং

পুষ্টি উপাদান / যৌগ

পরিমাণ

১)

ক্যালোরি

১০০ কিলোক্যালোরি

২)

প্রোটিন

২.৫ গ্রাম

৩)

টোটাল কার্বোহাইড্রেট

২৫ গ্রাম

৪)

ডায়েটারী ফাইবার

৫ গ্রাম

৫)

সুগার

৫ গ্রাম

৬)

টোটাল ফ্যাট

০.৫ গ্রাম

৭)

স্যাচুরেটেড ফ্যাট

০.১ গ্রাম

৮)

সোডিয়াম

১০ মিলিগ্রাম

৯)

পটাশিয়াম

৫০০ মিলিগ্রাম

১০)

ক্যালশিয়াম

১০০ মিলিগ্রাম

১১)

আয়রন

৪ মিলিগ্রাম

১২)

ভিটামিন সি

৫ মিলিগ্রাম

১৩)

স্যাটাভারিন

১-৩ % (শুকনো, পরিবর্তশীল)

১৪)

স্যাপোনিন

৫-১০% (শুকনো, পরিবর্তনশীল)

১৫)

অগিোস্যাকারাইড

১-২ গ্রাম

১৬)

ট্যানিন

১-২% (শুকনো, পরিবর্তনশীল)

** উৎস এবং প্রস্তুতির প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে পুষ্টি-উপাদান এবং যৌগগুলির মান পরিবর্তিত হতে পারে । সর্বদা পণ্যের লেবেল পরীক্ষা করে পণ্য ক্রয় করুন ।

শতভরীর ঔষধিয় বৈশিষ্ট্যসমূহ

শতভরীর মধ্যে স্যাপোনিনস, ফ্ল্যাভনয়েড, অ্যালকালয়েড এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ থাকে । আর এইসব উপাদানগুলির একত্র সমাবেশ শতভরীকে বিভিন্ন ঔষধিয় বৈশিষ্ট্য প্রদান করেছে । যে বৈশিষ্ট্যসমূহ মানবশরীরে বিশেষত: মহিলাদের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম । তাদের মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে আলোচনা করা হলো –

১) অ্যাডাপ্টোজেনিক বৈশিষ্ট্য – বিভিন্ন খনিজ পদার্থ এবং বিশেষ ধরনের জৈব যৌগের উপস্থিতির জন্যে শতভরীর মধ্যে অ্যাডাপ্টোজেনিক গুণাবলী দেখতে পাওয়া যায় । যার মানে হলো, বিভিন্ন ধরনের মানসিক এবং শারীরিক চাপের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতার বৃদ্ধি পাওয়া ।

২) ইমিউনোমডুলেটরী বৈশিষ্ট্য – শতভরীর মধ্যে থাকা ভিটামিন-সি, বিভিন্ন খনিজ এবং অন্যান্য জৈব যৌগগুলির জন্যে্এর মধ্যে ইমিউনোমডুলেটরী বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যায় । আর্এর ফলস্বরূপ, শতভরীর সেবনের ফলে মানবদেহের ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা এবং মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ।

৩) অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী – বিভিন্ন খনিজ এবং জৈব যৌগের একত্র সমাহারের ফলে শতভরীর মধ্যে এক বিশেষ ধরনের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী গুণাবলী দেখতে পাওয়া যায় । যার অর্থ হলো শতভরীর মধ্যে ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ কমানোর ক্ষমতা রয়েছে ।  

৪) অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণাবলী – শতভরীর মধ্যে কিছু প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সক্রিয় অবস্থায় থাকে, যার ফলে এইসব অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টগুলি শরীরের মধ্যেকার ফ্রি-র‌্যাডিক্যালসগুলিকে নষ্ট করে দেয় এবং শরীর থেকে বার করে দিতে সাহায্য করে । যার ফল হিসাবে শরীরের কোষগুলি বিভিন্ন অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে রেহাই পায় এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমে যায় ।  

শতভরীর উপকারিতা

১) মহিলা প্রজনন ব্যবস্থার জন্যে : - শতভরীর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ থাকার জন্যে এটি মহিলাদের এন্ডোমেট্রিওসিস (জরায়ুর আস্তরণের মধ্যেকার ইনফ্ল্যামেশণ) সমস্যার চিকিৎসায় সাহায্য করে । এর মধ্যে থাকা স্টেরয়েডাল স্যাপোনিন একটি প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেন রেগুলেটর হিসাবে কাজ করে । যার ফলে, এটি স্বাভাবিকভাবে মহিলাদের মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে । তাছাড়া পি.এম.এস (প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম) এর সমস্যাগুলি, যেমন – ক্র্যাম্প ইত্যাদির নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ।

২) মেজাজের পরিবর্তন : - সমীক্ষায় দেখা গেছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তনের সমস্যা বেশি দেখা যায় । আসলে অনিয়মিত মাসিক চক্র, গর্ভাবস্থা বা বিভিন্ন হরমোনজনিত সমস্যার কারণে মহিলারা প্রায়শই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন । শতভরীর মধ্যে থাকা অ্যাডাপ্টোজেনিক বৈশিষ্ট্য এবং অন্যান্য উপাদানের বিদ্যমানতার কারণে এটি একটি প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেন রেগুলেটর হিসাবে কাজ করে । যার ফলজনিত কারণে এটির ব্যবহারে ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তনের সমস্যায় ভুগছেন এইরকম মহিলারা উপকৃত হন ।

৩) PCOS-য়ের সমস্যায় : - PCOS ( Poly-Cystic Ovarian Syndrome) – য়ের কারণে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং যার জন্যে মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় । শতভরীর মধ্যে থাকা অ্যাডাপ্টোজেনিক বৈশিষ্ট্য এবং ইস্ট্রোজেন রেগুলেটরী গুণাবলী থাকার জন্যে এর ব্যবহারের ফলে হরমোনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং সেইসঙ্গে সিস্টের গ্রোথকেও বাধা দেয় । তাছাড়াও শতভরী মাসিক চক্রের সময়কাল, মাসিক চক্রের মধ্যেকার ব্যবধান এবং মাসিক চক্র চলাকালীন রক্তপ্রবাহের নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে । এটির ব্যবহারের ফলে জরায়ু এবং ডিম্বাশয়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় । সামগ্রিকভাবে শতভরী PCOS-য়ের সমস্যায় ভোগা মহিলাদের উল্লেখযোগ্যভাবে সাহায্য করে ।

৪) সন্তান উৎপাদন সমস্যায় :- মহিলাদের ক্ষেত্রে সন্তান উৎপাদনের জন্যে তাদের শরীরের FSH ( ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন )  এবং   LH (লুটিনাইজিং হরমোন)–য়ের ভূমিকা খব্ই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ, FSH (ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন) ডিমের থলির উৎপাদনকে উদ্দীপিত করতে পারে্ এবং LH (লুটিনাইজিং হরমোন) ডিমের ছাড়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । শরীরের এই দুটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে শতভরী গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নেয় । এছাড়াও শতভরী পুরুষদের ক্ষেত্রে টেরাটোস্পার্মিয়া (শুক্রাণুর অস্বাভাবিক আকৃতি), অলিগোস্পার্মিয়া (শুক্রাণুর সংখ্যা), হাইপোস্পার্মিয়া (শুক্রাণর গতিশীলতা) ইত্যাদি সমস্যাগুলির সমাধানে সাহায্য করে ।

৫) দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা দূর করতে :- শতভরীতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক এবং শক্তিশালী অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট উপাদান থাকার কারণে এটির ব্যবহারে মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করার শক্তিশালী গুণ দেখতে পাওয়া যায় । যার ফলে এটি মনকে শান্ত রাখতে, বিরক্তি কমাতে, মানসিক অস্থিরতা কমাতে এবং বিভিন্ন মানসিক সমস্যা, যেমন – বিষণ্ণতা, ডিমেনশিয়া ইত্যাদির চিকিৎসায় সাহায্য করে ।

৬) পাচন ক্ষমতায় : এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী বৈশিষ্ট্যগুলির জন্যে শতভরী গ্যাস্ট্রো-ইনটেস্টিনাল ইনফ্ল্যামেশনকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে । তাছাড়া গ্যাস্ট্রাইটিস, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, এবং আলসারের মতো সমস্যাগুলি থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে এবং পাচন ক্ষমতার বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে ।

৭) ইমিউন সাপোর্ট :- এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন ইমিউনো-মডুলেটরী উপাদানগুলি শরীরের ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে শরীরের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করে তোলে । শরীরে সংক্রমণের ঝুকি কমায় এবং শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে ।

শতভরীর জনপ্রিয়তা

বহু প্রজন্ম ধরে ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক প্রতিকার পদ্ধতিগুলিতে শতভরী তার কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তার জন্যে সুনামের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে । বিশেষত: মহিলাদের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এবং তদের বিভিন্ন সমস্যায় একটি প্রাকৃতিক সমাধান হিসাবে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে । হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা, সন্তান উৎপাদনের ক্ষেতে বিভিন্ন সমস্যার জন্যে এবং মানসিক সুস্থতার জন্যে মহিলাদের ক্ষেত্রে ঐতিহ্যগতভাবে একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসাবে সুফল প্রদান করে আসছে ।

বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলি সম্পর্কে চর্চা এবং বিভিন্ন গবেষণা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শতভরীকে একটি শক্তিশালী ভেষজ প্রতিকার হিসাবে আরো বহুল প্রচারের মাধ্যমে এনে ফেলেছে । যার ফল হিসাবে যেসব মানুষ স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্যে প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলিকে খুজে বেড়াচ্ছেন তাদের আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে শতভরী । আর শতভরীর অভিযোজিত এবং প্রাকৃতিক পুষ্টি-গুনাবলীর সম্ভার তাদের সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে আর ইন্টারনেটের দৌলতে আজ জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছাবার দৌড়ে প্রথম সারিতে এসে উপস্থিত হয়েছে ।

ব্যবহারের জন্য সতর্কতা

যদিও শতভরী সাধারণত: বেশিরভাগ মানুষের জন্যে নিরাপদ, তবে বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যিক :-

১) গর্ভাবস্থা :- শতভরী মহিলাদের স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারী, কিন্তু গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন অভিজ্ঞ ডায়েটেশিয়ান বা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে তবেই ব্যবহার করা উচিত ।

২) অ্যালার্জি :- কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এটির ব্যবহারে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়, তাই এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথমে অল্প ডোজ দিয়ে এর প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করে নেওয়া উচিত এবং কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে, তার পরামর্শ অনুযায়ী এটিকে গ্রহণ করা উচিত ।

৩) ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া :- শতভরী বেশ কিছু ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিবা করতে পারে, যেমন – হরমোন থেরাপি বা ডায়াবেটিসের ওষুধের ক্ষেত্রে । এই ধরনের কোন নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করলে অবশ্যই কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে, তার পরামর্শ অনুযায়ী এটিকে গ্রহণ করা উচিত ।

৪) ডোজ :- যেকোন প্রাকৃতিক সাপ্লিমেন্টের মতোই, তার নির্দেশিকা অনুযায়ী ডোজ গ্রহণ করা উচিত । শতভরীও সেই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয় । অতিরিক্ত পরিমাণে শতভরীর গ্রহণের ফলে শরীরে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে । তাই কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে, প্রথমে অল্প ডোজ দিয়ে তার প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করে তবেই এর সুনির্দিষ্ট ডোজ গ্রহণ করা উচিত ।

গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের জন্যে শতভরী নিরাপদ বলে কোনও প্রমাণ নেই । তাই এসব ক্ষেত্রে শতভরী ব্যবহার না করাই ভালো । ১৪ বছরের কম বয়েসী যেকোন সিশুর জন্যে শতভরী ব্যবহার করর আগে, অবশ্যই একজন পুষ্টি-বিশেষজ্ঞের সাথে অথবা এই সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাথে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত । আপনি যদি আপনার দেওয়া ডাক্তারের দ্বারা নির্ধরিত কোন ওষুধ গ্রহণ করেন, তাহলে এটি ব্যবহার করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন । ডায়াবেটিস, রক্তচাপ বা হার্টের জন্য নিয়মিত কোন ওষুধ সেবন করলে সেগুলো চালিয়ে যেতে হবে । মনে রাখবেন, এটা কোন ওষুধ নয়, অতভরী ব্যবহার করুন সুস্থতার জন্যে, চিকিৎসার জন্যে নয় ।

সব শেষে বলা যেতে পারে, শতভরী প্রাকৃতিক নিরাময় ক্ষমতার একটি প্রমাণ হিসাবে আজ সুনামের সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত । এর বৈচিত্র্যময় ঔষধিয় গুণাবলী, তার অসংখ্য উপকারিতা এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠা, তার ঐতিহ্যকে মনে রেখে যারা একটি স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক প্রতিকার খুঁজছেন তাদের আগ্রহ এবং সমস্যাকে মিটিয়ে চলেছে । ব্যবহারের আগে এর সতর্কতাগুলিকে বোঝা, এর সম্পর্কে জানা এবং কোন এক্সপার্টের তত্ত্বাবধানে সুনির্দিষ্ট ডোজ অনুযায়ী একে গ্রহণ করা সর্বোত্তম স্বাস্থ্য এবং জীবনীশক্তির দিকে একটি রুপান্তরমূলক সিদ্ধান্ত হতে পারে । মনে রাখবেন আমাদের সাইটের বিষয়বস্তু যেমন – টেক্সট, ছবি, গ্রাফিক্স ইত্যাদি শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে । প্রদত্ত তধ্য পেশাদার চিকিৎসা পরামর্শ বা চিকিৎসা বা রোগ নির্ণয়ের বিকল্প হওয়ার উ্দেশ্যে নয় । এই ব্লগ পোস্টে দেওয়া তথ্য বা লেখনী পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অন্যকে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো ।

 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ