মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতি করার জন্য কোন ১০ টি কাজ করা উচিত?
এই ব্লগ পোস্টে, আমরা মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ১০টি কাজ সম্পর্কে আলোচনা করবো । আমরা আশা করি, উদ্বেগ, হতাশা কমিয়ে একটি সুখী, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে এই ১০টি কাজ অনুসরণ করলে দারুণ লাভ পাওয়া যাবে ।
যদি আপনি নিয়মিতভাবে অব্যক্ত উদ্বেগ, দুঃখ বা ক্লান্তি অনুভব করেন, মনোযোগ দিতে সমস্যা হয় অথবা আপনার জীবন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে হয়, তাহলে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। যদিও অনেকেই এই সমস্যাগুলি সম্পর্কে অবগত নন, তবে সুসংবাদ হল যে কয়েকটি সহজ অভ্যাস আপনার মানসিক সুস্থতার ব্যাপক উন্নতি করতে পারে। আসুন, মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য ১০টি প্রমাণিত এবং বাস্তবসম্মত পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করি :
১) একটি রুটিন প্রতিষ্ঠা করুন এবং মেনে চলুন :
- কেন : একটি রুটিন প্রতিষ্ঠা করুন এবং এটি অনুসরণ করার অনুশীলন করুন। এর কারণ হল একটি সুসংগঠিত, নিয়ন্ত্রিত জীবন একজনের জীবনের উপর নিরাপত্তা এবং নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। আর একটি অনিয়ন্ত্রিত এবং অসংগঠিত জীবনধারা উদ্বেগ বাড়ায়।
- কী করবেন : প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠা, খাওয়া, কাজ করা বা পড়াশোনা করা, ব্যায়াম করা, বিশ্রাম নেওয়া এবং ঘুমাতে যাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী বজায় রাখার চেষ্টা করুন। এমনকি সপ্তাহান্তেও, জিনিসগুলিকে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল হতে না দিয়ে কিছুটা সংগঠিত এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করুন।
২) ব্যায়ামকে অগ্রাধিকার দিন :
- কেন : শারীরিক ব্যায়ামের সময় শরীর এন্ডোরফিন নামক একটি হরমোন নিঃসরণ করে, যা "ভালো লাগা" হরমোন নামেও পরিচিত। এই হরমোন মেজাজ উন্নত করতে, উদ্বেগ এবং হতাশা কমাতে এবং ঘুমের উন্নতি করতে সাহায্য করে।
- কী করবেন : দিনে অন্তত: একবার কমপক্ষে ৩০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। আপনি যা করতে উপভোগ করেন তা বেছে নিন; জিমে যাওয়ার জন্য নিজেকে চাপ দেওয়ার দরকার নেই । উদাহরণ হিসেবে সাইক্লিং, লাফালাফি, সাঁতার, জগিং, নাচ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
৩) একটি স্বাস্থ্যকর, সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন :
- কেন : আমরা যে খাবার খাই তা আমাদের শরীরকে শারীরিক পুষ্টি সরবরাহ করে, তবে আমাদের মস্তিষ্ক এবং মানসিক অবস্থাও এই পুষ্টির প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে। তদুপরি, যেহেতু আমাদের অন্ত্র এবং মস্তিষ্ক এতটা সংযুক্ত, এর সরাসরি এবং তাৎক্ষণিক প্রভাব রয়েছে।
- কী করবেন : তাজা ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য (যেমন লাল ভাত এবং ওটস), প্রোটিন (যেমন মসুর ডাল, মাছ, মুরগি, ডিম এবং বাদাম), এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি (জলপাই তেল, অ্যাভোকাডো) গ্রহণ বাড়ান। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি এবং ক্যাফেইন গ্রহণ কমিয়ে দিন এবং আপনার শরীরের জলচক্রের জন্য সঠিক পরিমাণে জল পান করার অভ্যাস করুন।
৪) ভালো ঘুমের স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করুন :
- কেন : পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয়, যা মানসিক নিয়ন্ত্রণ এবং স্মৃতিশক্তি সুসংহতকরণকে উৎসাহিত করে। বিপরীতভাবে, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব কোনও স্পষ্ট কারণ ছাড়াই বিরক্তি, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার কারণ হতে পারে।
- কী করবেন : প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে উঠুন। আপনার শোবার ঘর অন্ধকার, ঠান্ডা এবং শান্ত রাখুন। ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে ফোন, ট্যাবলেট এবং ল্যাপটপের স্ক্রিন বন্ধ করে দিন। আপনার চিন্তাভাবনা শান্ত করতে, মৃদু সঙ্গীত শুনুন অথবা বই পড়ুন।
৫) মানসিক চাপ মোকাবিলা করার পদ্ধতি শিখুন :
- কেন : আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য দীর্ঘস্থায়ী চাপ এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক সুস্থতার দিক থেকে এটি বিষের সমতুল্য।
- কী করবেন :
- শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম : নাক দিয়ে ধীরে ধীরে কয়েকটি গভীর শ্বাস নিন, কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন, তারপর ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এটি আপনাকে তাৎক্ষণিক প্রশান্তি এনে দেবে।
- মননশীলতা/ধ্যান : প্রতিদিন মাত্র ৫-১০ মিনিট সময় ব্যয় করুন আপনার চিন্তাভাবনা বর্তমানের উপর কেন্দ্রীভূত করার চেষ্টা করুন। ইউটিউবে নির্দেশিত ধ্যান ভিডিও বা হেডস্পেস এবং ক্যালমের মতো অ্যাপগুলি সহায়ক হতে পারে।
- প্রগতিশীল পেশী শিথিলকরণ : পর্যায়ক্রমে আপনার বিভিন্ন পেশী গোষ্ঠীগুলিকে কয়েক সেকেন্ডের জন্য প্রসারিত এবং ছেড়ে দিয়ে আপনার সারা শরীরে উত্তেজনা মুক্ত করুন।
- আপনি যা উপভোগ করেন তা করুন : গান গাওয়া, সঙ্গীত শোনা, ছবি আঁকা, বাগান করা, রান্না করা ইত্যাদি।
৬) সামাজিক সংযোগ স্থাপন করুন এবং বজায় রাখুন :
- কেন : মনে রাখবেন যে মানুষ সামাজিক প্রাণী। সমাজ ছাড়া, কারও অস্তিত্ব বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। অতএব, আপনার সম্প্রদায়ের অন্যদের সাথে দৃঢ় বন্ধুত্ব, পারিবারিক বন্ধন এবং সামাজিক সংযোগ গড়ে তুলুন। এটি আপনার চাপ কমাবে এবং আপনাকে খুশি বোধ করবে।
- কারণ : নিয়মানুযায়ী (বাস্তবে বা অনলাইনে) আপনার পরিবার এবং প্রকৃত বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করুন এবং তাদের সাথে দেখা করুন। একটি নতুন সামাজিক গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ে যোগদান করুন, যেমন একটি বই ক্লাব বা স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা। অন্যদের সাহায্য করার চেষ্টা করুন।
৭) নিজের যত্ন নিন (আত্ম-যত্ন) :
- কেন : নিজেকে উপেক্ষা করার ফলে ধীরে ধীরে শক্তি হ্রাস পায় এবং হতাশা বৃদ্ধি পায়।
- কী করবেন : প্রতিদিন নিজের জন্য কিছু সময় আলাদা করুন। নিজেকে উপভোগ করুন, সাঁতার কাটুন, একটি ভাল বই পড়ুন, প্রকৃতিতে সময় কাটান, অথবা একটি সিনেমা দেখুন। প্রয়োজনে, "না" বলতে শিখুন। নিজের প্রতি সদয় এবং ক্ষমাশীল হোন।
৮) ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সাফল্য উদযাপন করুন :
- কেন : লক্ষ্য অর্জন আত্মবিশ্বাস এবং সাফল্যের অনুভূতি তৈরি করে, যা মানসিক সুস্থতাকে উৎসাহিত করে।
- কী করবেন : যেকোনো বড় কাজ বা লক্ষ্যকে পরিচালনাযোগ্য টুকরো করে ভাগ করুন। একটি জার্নাল বা নোটবুক রাখুন যেখানে আপনি প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে আপনার কী অর্জন করতে হবে তা লিপিবদ্ধ করতে পারেন। প্রতিটি সাফল্যের জন্য নিজেকে চিনুন এবং পুরস্কৃত করুন, তা যত ছোট বা বড়ই হোক না কেন।
৯) প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে ভয় পাবেন না :
- কেন : নিজেরাই মানসিক যন্ত্রণা মোকাবেলা করা কঠিন। থেরাপিস্ট এবং পরামর্শদাতারা হলেন প্রশিক্ষিত পেশাদার যারা পক্ষপাত ছাড়াই শুনবেন এবং সহায়ক পরামর্শ দেবেন।
- কারণ : যদি আপনার মনে হয় যে সমস্যাটি আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে, আপনি দীর্ঘদিন ধরে ভয়ানক বোধ করছেন এবং এটি আপনার দৈনন্দিন কাজ সম্পাদন করা কঠিন করে তুলছে, তাহলে একজন পরামর্শদাতা বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।
১০) কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অভ্যাস করুন :
- কেন : যা ভালো আছে বা যা পেয়েছেন সেদিকে মনোযোগ দিলে হতাশা কমে, ইতিবাচক অনুভূতি বাড়ে।
- কী করবেন : প্রতিদিন সকালে বা রাতে ঘুম থেকে উঠে বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে ৪-৫ টি জিনিস লিখে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন, যার জন্যে আপনি ঈশ্বর বা প্রকৃতি বা বন্ধু অন্য যেকোন কারো কাছে । কি বিষয় আপনি ঠিক করুন, হতে পারে তা আপনার শরীর-স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বা আপনার ব্যক্তিগত অনুভূতি সম্পর্কিত অথবা পিয়জনের কাছ থেকে পাওয়া উপহার-ভালো মূহুর্ত-ভালোবাসার প্রকাশ ইত্যাদি । আপনার করা এই ছোট্ট অভ্যাসটি কিন্তু আপনার জীবন এবং জীবনের দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে । সুতরাং আজ থেকেই এই অভ্যাস শুরু করুন ।
সর্বোপরি মনে রাখুন : মানসিক স্বাস্থ্যের
উন্নতি একটি দীর্ঘ প্রয়াস সহ যাত্রার মতো । রোজ একটু একটু করে চেষ্টা করা, এগিয়ে
যাওয়াটাই সেখানে মূল কথা । নিজের প্রতি ধৈর্যশীল, যত্নবান, আন্তরিক এবং বাস্তবমুখী
হোন । সব দিন সমান যায় না, সবসময় একই রকম অনুভব নাও হতে পারে । তাই সেইসব মেনে
নিতে শিখুন । ক্রমান্বয়ে করা ছোট ছোট পরিবর্তন আপনার আগামী জীবনে বিশাল ও ব্যাপক
পরিবর্তন এনে দিতে পারে – এটা প্রতিনিয়ত নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করুন ।
প্রায়শ:ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ's)
১) মানসিক
স্বাস্থ্য খারাপের কিছু সাধারণ লক্ষণ কী কী?
উত্তর) : মনের
মধ্যে খালি খালি বোধ আসা; ক্রমাগত দু:খের অনুভূতি আসা বা উদ্বেগ অনুভব করা;
মেজাজের স্থিরতা না থাকা; নিজেকে পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবের থেকে গুটিয়ে নেওয়া;
লেখাপড়ায় বা কাজে মনোনিবেশ করতে অসুবিধা হওয়া; খাওয়া বা ঘুমের অভ্যাসে আচমকা
পরিবর্তন আসা (খুব বেশি খাওয়া বা কম খাওয়া অথবা খুব কম ঘুমানো/বেশি ঘুমানো); সবসময়
ক্লান্ত বা শক্তিহীন বোধ করা; বাস্তবের সাথে দূরত্ব তৈরী হওয়া ; সবসময় নিজেকে দোষী
বা দায়ী মনে হওয়া ইত্যাদি ।
২) কখন
বুঝবো যে আমার পেশাদার থেরাপিস্ট/কাউন্সেলরের সাহায্য নেওয়া উচিত?
উত্তর) : যদি আপনার অনুভূতি বা লক্ষণগুলো -
- ২ সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে থাকে এবং ভালো না হয়।
- দৈনন্দিন জীবনযাপন (কাজ, পড়াশোনা, সম্পর্ক, ঘরকাজ) কে ব্যাহত করছে।নিজেকে বা অন্যকে ক্ষতি করার কথা মাথায় আসে।
- নিজের প্রচেষ্টায় বা পরিবার-বন্ধুর সাহায্যে ঠিক হচ্ছে না বলে মনে হয়।
- তখনই একজন প্রশিক্ষিত মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৩) থেরাপি
বা কাউন্সেলিং আসলে কীভাবে সাহায্য করে?
উত্তর) : থেরাপিস্ট বা কাউন্সেলররা নিরাপদ ও গোপনীয় পরিবেশে আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। তারা আপনাকে –
- আপনার অনুভূতি ও চিন্তাভাবনা বুঝতে সাহায্য করেন।
- সমস্যার গভীরে যাওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে সহায়তা করেন।
- নেতিবাচক চিন্তাভাবনা চিনতে ও বদলাতে শেখান।
- স্ট্রেস, উদ্বেগ, হতাশা মোকাবেলার কার্যকর কৌশল শেখান।
- সম্পর্ক উন্নয়নের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করেন।
- আত্ম-সচেতনতা ও আত্ম-মূল্যবোধ বাড়াতে সহায়তা করেন।
৪) ওষুধ ছাড়াই
কি মানসিক সমস্যা (যেমন হতাশা, উদ্বেগ)
ভালো করা সম্ভব?
উত্তর) : হ্যাঁ, অনেক
ক্ষেত্রেই সম্ভব, বিশেষ করে মাঝারি বা
মৃদু মাত্রার জন্য। উপরে উল্লেখিত জীবনযাত্রার পরিবর্তন (ব্যায়াম, খাদ্য, ঘুম, স্ট্রেস
ম্যানেজমেন্ট), থেরাপি
(কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি - সিবিটি খুব কার্যকর), সামাজিক সমর্থন প্রায়শই
খুব ভালো ফল দেয়। তবে, গুরুতর বা জটিল অবস্থার
জন্য, বিশেষজ্ঞের
পরামর্শে ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে, যা থেরাপির সাথে যুক্ত
হলে সবচেয়ে ভালো কাজ করে। চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করে সমস্যার ধরন ও তীব্রতার উপর।
৫) দৈনন্দিন
জীবনে ছোট ছোট পরিবর্তন কি আসলেই মানসিক স্বাস্থ্যে বড় প্রভাব ফেলতে পারে?
উত্তর) : অবশ্যই!
আকস্মিক জীবনে বড় পরিবর্তন আনা এবং তাকে ধরে রাখা খুবই চ্যালেঞ্জিং । কিন্তু
জীবনের আর পাঁচটা কাজের মধ্যে দশ মিনিটের জন্য হেঁটে নেওয়া বা পাঁচ মিনিটের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের
অনুশীলন করা বা যার সঙ্গে কথা বললে মন ভালো থাকে তাকে একবার ফোন করে নেওয়া বা রাতে
শুতে যাওয়ার আগে একটু ডায়েরী লেখা বা ভালো লাগার গান শোনা ইত্যাদি ছোট ছোট
পরিবর্তন অভ্যাসে পরিবর্তন করা যেতেই পারে । আর এই সমস্ত অভ্যাসের প্রভাবগুলি
সমন্বিত আকারে একটা সময় মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্য, চিন্তাভাবনার ধরন এবং
সামগ্রিক মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার উপরে এক গভীর ও ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে
পারে ।
৬) মানসিক
স্বাস্থ্য উন্নয়নে কতদিন সময় লাগতে পারে?
উত্তর) : এই বিষয়টি সম্পূর্ণ
ভাবে সেই ব্যক্তির বর্তমান মানসিক অবস্থা, তার সমস্যার তীব্রতা এবং সেই ব্যক্তি
কোন কৌশল অবলম্বন করার পাশাপাশি কতোদিন এবং কিভাবে প্রয়োগ করছেন ইত্যাদি বিষয়ের
উপর নির্ভর করে । এমন কিছু কৌশল আছে যেগুলি প্রয়োগ করলে কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘন্টার
মধ্যেই বোঝা যায় ( যেমন- গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়ামের ফলে মেজাজের উন্নতি)।
কিন্তু স্থায়ী এবং দীর্ঘমেয়াদী লাভের জন্য ধৈর্যের সঙ্গে অভ্যাসের উপর নির্ভর করে
। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করার জন্যে কয়েক সপ্তাহ
থেকে কয়েক মাস অবধি সময় লাগতে পারে । এমনকি পেশাদার কোন থেরাপিস্টের থেকে নেওয়া
থেরাপির ক্ষেত্রেও বেশ কিছু সেশন লাগতে পারে । রাতারাতি কোন পরিবর্তন আসে না,
সুতরাং সেরকম কিছু করার জন্য নিজের উপর কঠোর হবেন না । তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে
।
সব শেষে .....
বর্তমান
জীবনে চাপ সর্বত্র । তা সে ছাত্রজীবনে হোক বা কর্মজীবনে বা পারিবারিক জীবনে ।
মানসিক স্বাস্থ্য এই কারণেই আজ অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে । যদিও
এখনো বহু মানুষ স্বাস্থ্য বলতে শরীরের যত্ন নেওয়া ছাড়া আর কোন বিষয় সম্পর্কে এখনো
সচেতন নন । আর তারই জন্য আমাদের অগোচরে আজ বিষণ্ণতা, মানসিক অবসাদের মতো
সমস্যাগুলি বহু মানুষের জীবনকে করে দিচ্ছে তছনছ । বৃদ্ধি পাচ্ছে আত্মহত্যার
প্রবণতা । আমরা আশা করবো আমাদের ব্লগ পোস্টের বিষয় “মানসিক
স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য কোন ১০টি কাজ করা উচিত” আপনাদের শেয়ারিং এর মাধ্যমে
মানুষের মধ্যে গড়ে তুলবে সচেতনতা ও সাবধানতা ।

.jpg)
0 মন্তব্যসমূহ