ঢ্যাঁড়স কিভাবে ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী হতে পারে ?
বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য-সমস্যাগুলির মধ্যে ডায়াবেটিস একটি অন্যতম । যারা এই
সমস্যায় ভুগছেন বা যারা স্বাস্থ্য-সচেতন, তাদের মধ্যে অনেকেই রক্তে শর্করার মাত্রা
নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাকৃতিক উপায় খুঁজে বেড়ান, তাদের জন্য একটি প্রাকৃতিক সমাধান
হলো ঢ্যাঁড়স, যা ভারতে ভিন্ডি বা ভেঙ্গা নামেও পরিচিত । এই সবুজ সবজিটি বিভিন্ন
পুষ্টি-উপাদান এবং জৈব যৌগে ভরপুর, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সামগ্রিক
স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে । এই ব্লগ পোস্টে আমরা ঢ্যাঁড়স কিভাবে
ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী হতে পারে, কিভাবে এটিকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যেতে
পারে এবং এই বিষয় সম্পর্কিত কিছু প্রায়শ:ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর আলোচনা করবো ।
ঢ্যাঁড়সের পুষ্টিগুণ
ঢ্যাঁড়স শরীরের
জন্য প্রয়োজনীয় অপরিহার্য পুষ্টি-উপাদানের একটি পাওয়ার হাউস, যা এটিকে ডায়াবেটিসের
নিয়ন্ত্রণের জন্য খাদ্য-তালিকার মধ্যে একটি দারূণ সংযোজন হিসাবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে
। ঢ্যাঁড়সের মধ্যে পাওয়া যায় এইরকম কিছু পুষ্টি-উপাদানের মধ্যে রয়েছে –
- ডায়েটারি ফাইবার – রক্তে শর্করার শোষণকে ধীর করতে সাহায্য করে
- ভিটামিন সি – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে
- ফোলেট – কোষের কার্যকারিতাকে সমর্থন করে এবং স্নায়ুর ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়তা প্রদান করে
- ম্যাগনেসিয়াম – রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট – অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় এবং ডায়াবেটিসের জটিলতা থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে
ঢ্যাঁড়সের পুষ্টি-উপাদানের তালিকা :-
|
পুষ্টি-উপাদানের নাম |
পরিমাণ (প্রতি ১০০ গ্রামে) |
১) |
ক্যালোরি |
৩৩
কিলোক্যালোরি |
২) |
কার্বোহাইড্রেট |
৭.৫ গ্রাম |
৩) |
ফাইবার |
৩.২ গ্রাম |
৪) |
প্রোটিন |
১.৯ গ্রাম |
৫) |
ফ্যাট |
০.২ গ্রাম |
৬) |
ভিটামিন সি |
২৩
মিলি.গ্রাম |
৭) |
ভিটামিন এ |
৩৬
মাইক্রোগ্রাম |
৮) |
ফোলেট |
৬০
মাইক্রোগ্রাম |
৯) |
ম্যাগনেসিয়াম |
৫৭
মিলি.গ্রাম |
১০) |
পটাসিয়াম |
২৯৯
মিলি.গ্রাম |
১১) |
ক্যালসিয়াম |
৮২
মিলি.গ্রাম |
১২) |
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট |
উচ্চ মাত্রায় |
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ঢ্যাঁড়স কীভাবে সাহায্য করে?
১) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে – ঢ্যাঁড়সে প্রচুর
পরিমাণে দ্রবণীয় ডায়েটারী ফাইবার থাকে, যা কার্বোহাইড্রেটের হজম এবং শোষণকে ধীর
করে দেয় ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতাকে রোধ করে । তাছাড়া
ফাইবার পেট খালি করতে করতে দেরী করিয়ে শরীরে গ্লুকোজের মাত্রাকে স্থিতিশীল রাখতে
সাহায্য করে । বিশেষ করে এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিশেষভাবে
উপকারী হতে পারে, কারণ তাদের সারা দিন ধরে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে
হয় ।
২) ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে – বিভিন্ন গবেষণায় দেখা
গেছে যে ঢ্যাঁড়স ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করে, যার ফলে শরীর
কার্যকরভাবে ইনসুলিনকে ব্যবহার করতে পারে এবং শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা কম
রাখতে পারে । ঢ্যাঁড়সের মধ্যে ফ্ল্যাভনয়েড এবং পলিফেনলের মতো যৌগ থাকে, যারা
ইনসুলিনের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে এবং গ্লুকোজের বিপাককে উন্নত করতে সাহায্য করে ।
নিয়মিত ঢ্যাঁড়সের সেবন শরীরের গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে, যা সময়ের
সাথে সাথে ডায়বেটিসের জটিলতার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ।
৩) শর্করার শোষণ কমিয়ে দেয় – ঢ্যাঁড়সে উপস্থিত আঠালো
মিউকিলেজ উপাদানটি অন্ত্রে জেলের মতো একটি আবরণ তৈরী করে, যা খাবার থেকে শর্করার
শোষণকে ধীর করে দেয় । এই জেলের মতো আবরণে শর্করার অণু এবং পাচক এনজাইম আবদ্ধ হয়,
যার ফলে রক্তে গ্লুকোজের দ্রুত প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে । আর এর ফলস্বরূপ, ঢ্যাঁড়স
শরীরে স্থিতিশীল শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে এবং খাওয়ার পরে শরীরে শর্করার বৃদ্ধি
কমাতে সাহায্য করে ।
৪) অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ – ঢ্যাঁড়স এটি উচ্চ
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ সবজি, যা শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ এবং কোষের
অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ
সমস্যা । এছাড়াও এর ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভনয়েড এবং পলিফেনল সামগ্রিকভাবে ফ্রি-র্যাডিক্যালসের
বিরুদ্ধে লড়াই করে কোষের ক্ষতি রোধ করতে পারে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধে সাহায্য করে ।
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধতার হওয়ায় ঢ্যাঁড়স অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে সামগ্রিক
বিপাকীয় স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে এবং ডায়াবেটিস সম্পর্কিত জটিলতার হাত থেকে শরীরের
অঙ্গগুলিকে রক্ষা করতে ভূমিকা নেয় ।
৫) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় – নিম্ন কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, যা ডায়াবেটিস পরিচালনাকারী ব্যক্তিদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । আবার অন্যদিকে উচ্চ কোলেস্টেরল ডায়াবেটিস সম্পর্কিত জটিলতার জন্য একটি মারাত্মক ঝুঁকির কারণ । ঢ্যাঁড়সের উচ্চ দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধতা শরীর থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল অপসারণ করতে সাহায্য করে এবং হৃৎপিন্ডের স্বাস্থ্যের এবং তার কার্যকারিতার উন্নতি ঘটায় । এর মধ্যে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরল অণুর সাথে আবদ্ধ হয় এবং রক্তপ্রবাহে শোষিত হতে বাধা প্রদান করে । ৬) কিডনীর ক্ষতি প্রতিরোধ করে – ডায়াবেটিসের সমস্যা এবং তার চিকিৎসা কিডনীর স্বাস্থ্যের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে । বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত ঢ্যাঁড়স খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে কিডনীর ক্ষতির প্রতিরোধ করা যেতে পারে । ঢ্যাঁড়সের প্রাকৃতিক যৌগগুলি শরীরের প্রদাহ কমিয়ে এবং বর্জ্য পদার্থের পরিস্রাবণকে উন্নত করে কিডনীর কার্যকারিতাকে সমর্থন করে । তাছাড়াও, রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে ঢ্যাঁড়স ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথির ঝুঁকি কমায়, যা ডায়াবেটিস সম্পর্কিত একটি গুরুতর জটিল সমস্যা ।
এক নজরে ডায়াবেটিসের জন্য ঢ্যাঁড়সের উপকারিতা :-
- রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে – উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ার জন্যে শর্করার শোষণকে ধীর করে দেয় ।
- ইনসুলিন সংবদনশীলতা উন্নত করে – ফ্ল্যাভনয়েড এবং পলিফেনল উপাদান সমৃদ্ধ, যারা ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় ।
- শর্করার শোষণ কমায় – এর মিউকিলেজ উপাদান অন্ত্রে জেলের মতো আবরণ তৈরী করে, যা রক্তপ্রবাহে গ্লুকোজের প্রবেশকে ধীর করে দেয় ।
- ডায়াবেটিসের জটিলতা কমায় – অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ হওয়ার জন্যে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে ।
- কোলেস্টেরল কমায় – অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগের উপকারিতা করে ।
- কিডনীর উপকারিতা করে – উচ্চ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের জন্য অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়, ফলে কিডনীর উপর চাপ কমে এবং কিডনীর স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে ।
১) ঢ্যাঁড়সের জল (ভেঙ্গা জল) –
- প্রথমে ২-৩ টি তাজা ঢ্যাঁড়স নিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে ।
- ঢ্যাঁড়সগুলির প্রান্তভাগগুলিকে কেটে ফেলুন ।
- তারপরে ঢ্যাঁড়সগুলিকে অর্ধেক করে কেটে নিন ।
- এক গ্লাস পরিমাণ জলে সারা রাত কাটা ঢ্যাড়সগুলিকে ভিজিয়ে রাখুন ।
- সকালে খালি পেটে সেই ঢ্যাঁড়স ভেজা জল পান করুন ।
২) কাঁচা ঢ্যাঁড়স – সর্বাধিক উপকারের জন্য ঢ্যাঁড়সের
প্রান্ত ভাগগুললিকে কেটে ফেলে দিয়ে বাকি ঢ্যাঁড়সটিকে টুকরো টুকরো করে কেটে
স্যালাডে খেতে পারেন ।
৩) রান্না করা ঢ্যাঁড়স –
- সবজি হিসাবে ঢ্যাঁড়স আপনার খাবারে ভেজে বা তরকারিতে দিয়ে একটি আকর্ষক ও উপাদেয় হিসাবে রান্না করে খেতে পারেন ।
- প্রান্তভাগ গুলিকে সামান্য কেটে ভাতের মধ্যে দিয়ে বা শুধু জলের মধ্যে সেদ্ধ করে খেতে পারেন ।
৪) ভেঙ্গা বা ঢ্যাড়স গুঁড়ো – ঢ্যাঁড়সকে শুকিয়ে নিয়ে গুড়ো করে
নিন এবং প্রতিদিন এক চা চামচ জলের সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন ।
ঢ্যাঁড়স খাওয়ার
ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা :
- অতিরিক্ত ঢ্যাঁড়স খাওয়া থেকে বিরত থাকুন । কারণ অতিরিক্ত ফাইবার আপনার হজমের সমস্যা তৈরী করতে পারে ।
- সবসময় তাজা ঢ্যাঁড়স বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন ।
- পুষ্টি-উপাদানের বেশিরভাগ সংরক্ষণের জন্য অতিরিক্ত রান্না করা এড়িয়ে চলুন ।
- যদি আপনি ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করেন এবং কোন পেশাদারের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যতালিকা অনুসরণ করেন, তাহলে কোন বড় পরিবর্তন করার আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন ।
প্রায়শ:ই
জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
(FAQs)
১) ঢ্যাঁড়স কি
ডায়াবেটিস নিরাময় করতে পারে ?
উত্তর): ঢ্যাঁড়স
ডায়াবেটিস নিরাময় করতে পারে না, তবে এটি শর্করার শোষণ কমাতে পারে এবং ইনসুলিন
সংবেদনশীলতার উন্নতি ঘটিয়ে কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ছাড়াই রক্তে শর্করার মাত্রা
কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে । ফলে, ডায়াবেটিস রোগীদের
খাদ্যতালিকায় এটি একটি দারুণ স্বাস্থ্যকর সংযোজন হয়ে উঠতে পারে ।
২) ডায়াবেটিসের
জন্য দিনে কতোবার ঢ্যাঁড়সের জল পান করা উচিত ?
উত্তর): রক্তে
শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একবার ঢ্যাঁড়সের
জল পান করাই যথেষ্ট হতে পারে । তবে সেক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা একটি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং সক্রিয় জীবনধারার সঙ্গে ঢ্যাঁড়সের জল
পান করলে ভালো ফলাফল লাভ করতে পারেন ।
৩) রান্না করলে
কি ডায়াবেটিসের জন্য ঢ্যাঁড়সের উপকারিতা কমে যায় ?
উত্তর): সামান্য
পরিমাণে রান্না করলে এর সেরকম কোন পরিবর্তন হয় না, তবে অতিরিক্ত রান্না করলে এর
ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ফাইবার জাতীয় পুষ্টি-উপাদানগুলির ক্ষতি হতে
পারে । সুতরাং ডায়াবেটিসের ব্যবস্থাপনার জন্যে ঢ্যাড়সের স্বাস্থ্য-উপকারিতা ধরে
রাখার সর্বোত্তম উপায় হলো, একে স্টিমড্ করে বা সেদ্ধ করে বা হালকা করে ভেজে অথবা
কাঁচা খাওয়া ।
৪) ঢ্যাঁড়স কি
সমস্ত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যে নিরাপদ ?
উত্তর):
সাধারণভাবে ঢ্যাঁড়স সমস্ত রকম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যে নিরাপদ । তবে যদি আপনার কোন
অন্তর্নিহিত শারীরিক সমস্যা থাকে, হজমের সমস্যা থাকে অথবা আপনি যদি মেটামর্ফিন বা
ইসুলিনের মতো কোন নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণ করেন, তাহলে সম্ভাব্য মিথস্ক্রিয়া এড়ানোর
জন্যে অথবা যদি কোন পেশাদারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোন খাদ্যতালিকা অনুসরণ
করেন, তাহলে অবশ্যই এটি গ্রহণের আগে ডাক্তারের সঙ্গে একবার পরামর্শ করে নেওয়া উচিত
।
৫) ঢ্যাঁড়স কি
ডায়াবেটিসের সাথে ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে ?
উত্তর): যেহেতু
ঢ্যাঁড়সে ক্যালোরি অত্যন্ত কম এবং ফাইবার বেশি, যা ওজনে সাহায্য করে । ফাইবার বেশি
হওয়ার জন্য এটি তৃপ্তি বাড়ায়, অতিরিক্ত খাওয়া রোধ করে এবং সামগ্রিক
বিপাকীয় স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় । ফলে, এটা বলা যেতেই পারে যে, ঢ্যাঁড়স সরাসরি
ওজন কমাতে না পারলেও ওজন নিয়ন্ত্রণে অবশ্যই সাহায্য করতে পারে ।
৬) অতিরিক্ত ঢ্যাঁড়স খাওয়ার কি কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া আছে ?
উত্তর): উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকার জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে ঢ্যাঁড়স খাওয়ার ফলে পেট
ফাঁপা, গ্যাস বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে । তাছাড়া কিছু ব্যক্তির
ক্ষেত্রে কিডনীতে পাথর তৈরীর কারণও হতে পারে । তাই, অতিরিক্ত পরিমাণে নয় –
পরিমিতভাবে ঢ্যাঁড়স খাওয়া উচিত ।
শুধুমাত্র একটি সাধারণ সবজি নয়, ঢ্যাঁড়স তার উচ্চ ফাইবার,
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং অন্যান্য পুষ্টি-উপাদানে সমৃদ্ধতার কারণে একটি
দুর্দান্ত প্রাকৃতিক প্রতিকার হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
দারুণভাবে সাহায্য করতে পারে । যেমন ভাবেই একে খাওয়া হোক না কেন, এটি রক্তে
শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য
করতে পারে । তবে কখনোই এটি সম্পূর্ণ চিকিৎসার বিকল্প হতে পারে না । সঠিক চিকিৎসার
সঙ্গে কোন পেশাদারের সাহায্য নিয়ে সুষম খাদ্য গ্রহণের সাথে এটিকে খাদ্যতালিকায়
অন্তর্ভুক্ত করে ডায়াবেটিসের ব্যবস্থাপনায় একে ব্যবহার করলে এর সর্বোত্তম উপকারিতা
লাভ করা যেতে পারে ।
0 মন্তব্যসমূহ