বাংলা রেসিপি : - হ্যাল্লো, বন্ধুরা ! স্বাগতম আমার ব্লগের রেসিপি বিভাগে । আজকে আমরা আলোচনা করবো প্রোটিন এবং কলার শেকের রেসিপি নিয়ে । এই শেকটি শুধু পুষ্টিকর নয়, স্বাদেও বেশ মজাদার । কিন্তু আমি জানি আপনাদের মনে অনেক প্রশ্ন আসছে, যেমন – এতো কিছু থাকতে ব্যানানা বা কলাই কেন? আমি আশা করি এই ব্লগ পোস্টটি যখন আপনি পড়তে থাকবেন, তখন আস্তে আস্তে আপনার মনে আসা প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনারা পেয়ে যাবেন ।
প্রোটিনের সঙ্গে ব্যানানা বা কলার শেক কেন ?
আমরা যারা এই ব্লগ পড়ছি তারা অবশ্যই শ্বাস্থ্য সম্পর্কে কমবেশি আগ্রহী বা স্বাস্থ্য সচেতন । তাই আমরা অনেকেই জানি, প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্যে কতোখানি গুরুত্বপূর্ণ । তাই হয়তো প্রোটিন নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠছে না । কিন্তু তার সঙ্গে কলা কেন ? এই প্রশ্নটাই আমাদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে । আসলে আমরা অনেকেই বিভিন্ন ভাবে প্রোটিন খেয়ে থাকি । কখনো গরম জলে গুলে আবার কখনো বা গরম দুধের সঙ্গে ।
আসলে কলা শুধু স্বাদে অতুলনীয় নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর । হয়তো আপনারাও দেখে থাকবেন, স্পোর্টসম্যানরা খেলার মাঝে প্রায়শ:ই কলা খেয়ে থাকেন । একটা সাধারণ মাঝারি মানের কলাতে থাকে – ক্যালোরি, গুড কার্বোহাইড্রেট, ডায়েটারী ফাইবার, গুড ফ্যাট এবং ভিটামিন-সি, ভিটামিন বি-৬ এবং সেইসঙ্গে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানীজ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ, আর সঙ্গে প্রচুর প্রাকৃতিক অ্যনি্টি-অক্সিড্যান্ট ।
স্বাভাবিকভাবেই এইসব পুষ্টি উপাদানগুলির একত্র সমাহার আমাদের শরীরে বিভিন্ন স্বাস্থ্যজনিত লাভ দেয় । যেমন – পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে, হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে, পেশী এবং স্নায়ুর কার্যকারিতাকে সমর্থন করতে সাহায্য করে । কলার মধ্যে থাকা ডায়েটারী ফাইবার পাচনতন্ত্রের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে এবং শরীরের শর্করার স্তরকে নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা নেয় । ভিটামিন বি-৬, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে, রক্তকণিকার উৎপাদনে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ভূমিকা গ্রহণ করে । কলার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টগুলির মধ্যে ডোপামিন এবং ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টগুলি প্রদাহ কমাতে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে । তাছাড়া কলার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক শর্করাগুলি (ফ্রুকটোজ, গ্লুকোজ এবং সুক্রোজ) শরীরে মধ্যে খুব দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে পারে ।
আর এইসব কারণে প্রোটিনের সঙ্গে কলা যোগ করলে প্রোটিনের লাভগুলির সঙ্গে কলার এই সমস্ত পুষ্টি-লাভ গুলি যুক্ত হয়ে যায় এবং শেকটিকে একটি অতিরিক্ত পুষ্টি-গুণে সমৃদ্ধ করে তোলে । তাছাড়াও, কলার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক মিষ্টতার জন্যে প্রোটিন শেকটিতে অতিরিক্ত চিনি যোগ না করলেও চলে । ফলে, চিনির অপকারিতার দিকটিকেও কমিয়ে ফেলা যায় ।
প্রোটিন কলার শেকের রেসিপি
চলুন, এবারে ধাপে ধাপে দেখে নেওয়া যাক, কিভাবে বানানো যায় প্রোটিন-ব্যানানা শেক । কোন কিছু বানানোর আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জিনিসটা বানাতে গেলে কি কি লাগবে বা কি কি উপকরণ লাগবে ।
উপকরণ :
(ক) একটি পাকা কলা (যতো বেশি পাকা হবে, স্বাদের জন্যে ততই ভালো)
(খ) এক স্কুপ প্রোটিন পাউডার (রুচি অনুযায়ী - চকোলেট বা ভ্যানিলা)
(গ) এক কাপ দুধ (পছন্দ অনুযায়ী)
(ঘ) এক টেবিল চামচ পিনাট বাটার (স্বাদ বাড়ানো্ এবং অতিরিক্ত প্রোটিন হিসাবে)
(ঙ) অর্ধেক চা-চামচ মধু বা অন্য কোন প্রাকৃতিক সুইটনার (ইচ্ছানুযায়ী, অতিরিক্ত মিষ্টতার জন্যে)
(চ) কিছু বরফের টুকরো ।
প্রস্তুতি পদ্ধতি :
(১) প্রথমেই কলাটির খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো
টুকরো করে কেটে একটা পাত্রে রেখে দিন । যদি আপনি শেকটিকে ঠান্ডা বা কোল্ড শেক করতে
চান, তাহলে একটু আগে কলাটিকে কেটে কিছু সময়ের জন্যে ফ্রিজে রেখে দিন ।
(২) একটা বড় পাত্রে প্রথমে দুধটা ঢেলে তার
মধ্যে প্রোটিন পাউডার, পিনাট বাটার, মধু এবং কলার টুকরোগুলোকে নিয়ে ভালো করে
মিশিয়ে নিন । ঠান্ডা শেক চাইলে তার মধ্যে কিছু বরফ মিশিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে
নিন ।
(৩) সমস্ত কিছু ভালো মতো মিশে গেলে একবার
ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন । যতোক্ষণ না আপনার পছন্দমতো ক্রিমি বা শেকের আকারে
আসে । চাইলে আপনি প্রয়োজনমতো দুধ বা বরফ যোগ করে নিন ।
(৪) অল্প একটু শেক নিয়ে টেস্ট করে নিন । আর
পছন্দমতো মিষ্টি বা অন্য কোন্ উপকরণ লাগলে যোগ করে ব্লেন্ড করে নিন ।
আর কি ? আপনার শেক তৈরী হয়ে গেছে । গ্লাসে নিয়ে
পান করুন আর দারুণ এক স্বাদের মজা নিন । উপভোগ করুন দারুণ এক পানীয়ের, স্বাস্থ্যের
ফায়দার সঙ্গে ।
0 মন্তব্যসমূহ